ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন থানা ও আদালতে করা মামলায় কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলার তদন্তে সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতার না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্তের পর ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়। পরে ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ অধিদফতরের ডিআইজি (কনফেডেন্সিয়াল) কামরুল হাসানের সই করা একটি চিঠি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে শেখ হাসিনা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এসব মামলার অধিকাংশই হত্যা বা হত্যাচেষ্টার মামলা।
এসব মামলায় অভিযোগ, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে মারা যান।
আসামির তালিকায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ অনেক সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।
পাশাপাশি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া এসব মামলায় গণহারে আসামি করায় সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন ইউনিটে পুলিশ সদর দফতরের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদতবরণকারীদের পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক দায়ের করা হত্যা ও অন্য মামলায় তদন্তের আগে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।