শেখ হাসিনার দেশত্যাগের দিন (৫ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবন, গণভবনসহ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে স্থাপনাগুলো কাজের অনুপযোগী হয়ে ওঠে।
বর্তমানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হবে। টানা ১৫ দিন সংস্কার কাজ করে প্রস্তুত করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়। ইতোমধ্যে আলোচিত এ কার্যালয়ের বাইরে-ভেতরে নামফলকও পরিবর্তন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করার কথা রয়েছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটেছিল প্রধানমন্ত্রীর এই কার্যালয়, গণভবন, জাতীয় সংসদ ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। এই কার্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতির সংস্কার করতে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তারকে প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মনিরুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে সংস্কারমূলক কাজ পরিচালনা করা হয়। সংস্কার কাজ করার সময় সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ইলেকট্রিক্যাল, সিভিল, কম্পিউটার, সিকিউরিটি ও রংয়ের সম্পূর্ণ কাজ করতে হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাদের বসার কক্ষও ঠিকঠাক করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেড জোন, সচিব, পরিচালক, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অফিসসহ শুধু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ অন্তত শতকোটি টাকার ওপরে। কিছু কিছু ফার্নিচার সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা গেলেও অনেক কিছুই ফেলে দিতে হয়েছে। যেহেতু পরবর্তী সরকারপ্রধান এই অফিসেই বসবেন তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে সম্পূর্ণ সংস্কার করার মতামত দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হিসাবে অন্য কোনো ভবন সাজাতে গেলেও অনেক খরচের প্রয়োজন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, পরবর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হিসাবে অন্য ভবন প্রস্তুত করলে পরবর্তী সরকার তা ব্যবহার নাও করতে পারে। তাই অপচয় ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে ব্যবহার উপযোগী করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে ঢাকা শহরের তেজগাঁওর পুরোনো জাতীয় সংসদ ভবনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৯১ সালের আগ পর্যন্ত এটি রাষ্ট্রপতির সচিবালয় ছিল।