অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর (অব.) সঙ্গে
স্বাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সারাহ কুক।
এ সময় তারা সন্ত্রাস দমনে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলা, পুলিশ সংস্কার, বন্যা পুনর্বাসন ও রোহিঙ্গাদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছি, তবে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সহযোগিতা দিয়ে যুক্তরাজ্য সহায়তা করতে পারে।
জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, সেপ্টেম্বরে এ সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের একটি এক্সপার্ট টিম বাংলাদেশ সফর করবে। তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এ সময় সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত দুই মাসে (৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট) সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা করে।
তিনি বলেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। উপদেষ্টা এ বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বাংলাদেশ সফরের কথা হাইকমিশনারকে অবহিত করেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাজ্য বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই। উপদেষ্টা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।
সারাহ কুক যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ট অপারেশনাল প্রসিডিউর অনুসরণ করা হবে।
উপদেষ্টা এ সময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন।
হাইকমিশনার জানান, রোহিঙ্গাদের সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়নে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বিগত ৭ বছরে দেশটি রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪শ’ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকে, সেজন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করে যাচ্ছে। উপদেষ্টা এ সময় বন্যার্তদের সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের সহায়তা কামনা করেন।
সাক্ষাৎকালে যুক্তরাজ্য দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ডইন এডেলে সিয়ানবোলা
ও ইমিগ্রেশন লিয়াজো এবং মাইগ্রেশান ম্যানেজার লী ম্যাকরাইসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস।