কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষকতায় হামলা চালানো হয় বলে জানা যায়। এ হামলার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গণহারে পদত্যাগ করছেন।
হামলা-সংর্ঘষ নিয়ে কথা বলেছেন আলোচিত সংসদ সদস্য (এমপি) ব্যারিস্টার সুমন। মঙ্গলবার হাইকোর্ট চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কোনো মারধরের ঘটনায় থেকে থাকলে এটি ছাত্রলীগের দলীয় সিদ্ধান্ত না। এটা হচ্ছে অতি আবেগ। তারা নিজেদেরকে প্রমাণ করার জন্য ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগিয়ে আরেকজনকে মারছে। এটা কি তারা বোঝেন না যে, কাউকে মারলে সেটার ভিডিও হচ্ছে, সারা দেশের মানুষ জানছেন। এতে ছাত্রলীগের ক্ষতি হচ্ছে। যারা বোঝেন, তারা কখনও এ ধরনের ঘটনায় জড়াবেন না।
কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের অ্যাপিলেট ডিভিশনের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে সুমন বলেন, প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তা দিতে তিনি প্রস্তুত।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমি দাবি জানাচ্ছি, শুধু এক মাসের জন্য অ্যাপিলেট ডিভিশনের রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত আপনারা আন্দোলন স্থগিত করেন। আপনারা যদি চান, তবে আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, তাকে বললে তিনি বুঝবেন না — এমন কোনো জিনিস নেই। আমি তার কাছাকাছি থেকে আপনাদেরকে বলছি, তাকে বুঝিয়ে বলা গেলে তিনি বোঝেন না — এমন কোনো জিনিস নেই।’
ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যা হয়েছে, তা দুঃখজনক উল্লেখ করে সুমন বলেন, ‘এ পরিস্থিতি এড়াতে হবে যেকোনো ভাবে। সোমবার যারা আহত হয়েছেন, আমি সরকারের কাছে দাবি জানাব, তাদেরকে পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমার মনে হয়, আপনারা যে প্রক্রিয়ায় দাবি আদায় করতে চাচ্ছেন, এ প্রক্রিয়া সঠিক না। আপনারা বলছেন, আপনাদের আন্দোলন সরকারের সঙ্গে, আদালতের সঙ্গে নয়। কিন্তু আন্দোলনে আপনারা যেটা চান, সেটা আদালত থেকে আসলে তো আন্দোলনের দরকার পড়ে না। প্রয়োজনে আদালতে আইনজীবী হিসেবে আমি থাকব। যৌক্তিক সমাধানের চেষ্টা করব। যা যা বলা লাগে, আমি তা বলব। এভাবে মুখোমুখি হয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট আর রক্তাক্ত পরিবেশ আমরা দেখতে চাই না।
সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে — রোববার বিকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিয়ে রাতভর বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এরপর সোমবার দুপুরের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। কয়েক ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে।