আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন চলবে এবং আইনের পথ ধরেই সব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। শুক্রবার দুপুরে কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ প্রকল্পের আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের মাঝে সঞ্চয়ের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আন্দোলনের কিন্তু কোনো ইস্যু নাই। আপনারা শুধু শুধু রাস্তায় থাকবেন না। আপনাদের কাজ হচ্ছে লেখাপড়া করা।
তিনি বলেন, আপনাদের কোন বক্তব্য থাকলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, সেখানে আপনারা বক্তব্য রাখবেন। আমি আশা করি আপনারা স্ব-স্ব বুদ্ধিতে ক্লাশে ফিরে যাবেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন ছাত্ররা। ২০১৮ সালে এই আন্দোলন একবার হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনা এই কোটা বাতিল করে দিয়েছিলেন। সেই কোটা বাতিল করার পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগে একটা মামলা করেন। এ মামলায় যারা আজকে আন্দোলন করছেন তারা কিন্তু পক্ষভুক্ত হন নাই। হাইকোর্টের সামনে তারা নিজেরা কিংবা তাদের কোন আইনজীবী বক্তব্য প্রদান করেন নাই। পরে হাইকোর্ট রায় দিল কোটা যেটা বাতিল হয়েছে সেটা বেআইনি। তখন সরকার আবার আপিল বিভাগে আপিল করল। আপিল করার পর সেখানেও কিন্তু যারা আজকে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন, রাস্তায় নেমেছেন তারা পক্ষভুক্ত হয়নি।
আনিসুল হক বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেছেন আন্দোলনকারীরা যদি আদালতে এসে তাদের বক্তব্য পেশ করতে চায় তাহলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোটের্র আপিল বিভাগ তাদের বক্তব্য শুনবেন এবং তাদের সব বক্তব্য বিবেচনায় নিবেন। এরপরে কোনো আন্দোলন থাকে না, কোনো কথা থাকে না।
তিনি আরও বলেন, যৌক্তিক পরিবর্তন আসতেই পারে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫২ বছর হয়েছে। অনেক কিছুর যৌক্তিক সংস্কার হতেই পারে। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। যখন আদালতে মামলা চলে, আদালতের বিবেচ্য বিষয় থাকে তখন আমি সে বিষয়ে কোন কথা বলি না। মনে রাখতে হবে কোনো বাঙালিই কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা না করলে সেটা মানবে না।
কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহারিয়ার মুক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছাইদুর রহমান স্বপন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নান, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবদুল আজিজ, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পল্লী-কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ এর আওতায় ১০০ উপকারভোগীর প্রত্যেককে ১ লাখ ২০ হাজার ৫০০ টাকা করে সঞ্চয়ের এক কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করেন। এর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৩২ টাকা ব্যয়ে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নবনির্মিত বাসভবন ও ১ কোটি ৩২ লাখ ২০ হাজার ২৮৮ টাকা ব্যয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নবনির্মিত বাসভবন উদ্বোধন করেন।