আবারও ভারত সফর করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি খুবই ভালো নিদর্শন যে আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশের নেতারা ঘন ঘন সফর বিনিময় করেন। তাঁদের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া আছে।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগের সফরটির সঙ্গে যদি এবারের সফরের তুলনা করেন তাহলেও বিষয়টি স্পষ্ট। ভারতের নতুন সরকার গঠনের সময় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লি এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদির নতুন সরকারকে শুভ কামনা জানাতে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ভারতে আসছেন মোদির সেই সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে। বলতেই হবে, এটি দুই দেশের ও দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন।
শুধু তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নয়, বাংলাদেশের আগ্রহের তিস্তা প্রকল্প এবং যার ব্যাপারে অর্থায়ন ও সহযোগিতায় ভারতও আগ্রহ দেখাচ্ছে—এসব বিষয় সব প্রকল্পেই আমাদের আগ্রহ থাকে, যাতে দুই দেশই উপকৃত হয়।
পানিবণ্টন, প্রকল্প, বাণিজ্য, নিত্যপণ্য রপ্তানি—এগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় সফর কিন্তু খুবই কাজে আসে। আমার মনে হয়, এগুলোসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে শীর্ষ বৈঠকে।
বাংলাদেশ ও ভারত ভালো বন্ধু। এবার আমরা বলতে পারব, আমাদের নেতারা ঘন ঘন বৈঠক ও সাক্ষাৎ করতে পেরে আনন্দিত হন।
এটি দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন ও আস্থার বহিঃপ্রকাশ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরে যাবেন। এটি আরো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুই পক্ষেরই পরস্পরকে জানাবোঝা দরকার।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি আমাদের জন্য সম্মানের।
এখন দ্বিপক্ষীয় সফরে দুই দেশের সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হবে। এভাবেই সম্পর্ক ও ভালো কাজ এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের পর আগামী মাসে চীন সফরে যাচ্ছেন। অনেকে বলেন, শেখ হাসিনা ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে ভারসাম্য করছেন। আমি মোটেও তা মনে করি না। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশেষ ও স্বতন্ত্র। অন্য কারো সঙ্গে এই সম্পর্কের ভারসাম্য সৃষ্টির কোনো বিষয় নেই। তাই শেখ হাসিনাকে ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে—এমন কথার অর্থ আমি বুঝি না।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গত দেড় দশকে অনেক বদলে গেছে। বিশেষ করে, নিরাপত্তা ইস্যুতে এখন আমাদের পুরোপুরি বোঝাপড়া আছে। আমরা স্থলসীমান্ত, সমুদ্রসীমান্ত সমস্যা সমাধান করতে পেরেছি। এখন আমরা দুই দেশের জনগণের মঙ্গল, সমৃদ্ধি, অর্থনীতি, বাণিজ্য—এগুলোতে মনোযোগ দিচ্ছি। দুই দেশই তাদের জনগণের মঙ্গল চায়।
এসব বিবেচনায় বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের আসন্ন বৈঠকে দুই দেশের জনগণের কল্যাণই অগ্রাধিকার পাবে।