একাদশ সংসদের যেসব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বর্তমান দ্বাদশ সংসদের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হতে পারেননি, তারা আগামী আরও দুই মাস সরকারি বাড়ি ছাড়ছেন না। সাবেক এসব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা নতুন বাসা খুঁজছেন। এ জন্য এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে। এমন তথ্যই তারা সরকারি আবাসন পরিদপ্তরকে জানিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন বাসা খুঁজে নিয়ে সরকারি বাড়ি ছাড়বেন।
গতকাল বুধবার বিকালে দৈনিক মানবকণ্ঠকে এমন তথ্য জানিয়েছে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মো. শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া। কত দিনের মধ্যে সাবেক মন্ত্রীরা সরকারি বাসা ছাড়তে পারেন এমন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রীদের বিষয়ে সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট বা আলাদাভাবে কোনো নিয়ম-নীতি নেই। তবে নতুন মন্ত্রীদের নামে বরাদ্দ দেয়া বাড়িগুলো মেরামতের প্রয়োজন হলে সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আনুমানিক কত মাস হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই থেকে আড়াই মাস।
মো. শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া আরো জানান, সাবেক মন্ত্রীরা অনেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেন। তারপর নতুন মন্ত্রীরা তাদের পছন্দের বাসায় উঠেন।
এদিকে দ্বাদশ সংসদে যেসব নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা স্থান পেয়েছেন তারা চলতি মধ্য জানুয়ারি থেকে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। সরকারি আবাসন পরিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ১৭ জানুয়ারিতে লিখিতভাবে আবেদন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, ১৪ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ১৪ জানুয়ারি ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ১৪ জানুয়ারি কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, ১৩ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, ১৫ জানুয়ারি রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, ১৪ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান গত ১৪ জানুয়ারি বাড়ি পেতে আবেদন করেছেন। তারা সবাই বাংলোবাড়ির জন্য আবেদন করেছেন। অপরদিকে সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের মধ্য থেকে শুধুমাত্র সাবেক সংস্কৃতি-প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ আগামী ৩১ জানুয়ারিতে সরকারি বাড়ি ছাড়ছেন। তিনিই শুধু লিখিতভাবে বাড়ি ছাড়ার দরখাস্ত দিয়েছেন।
সরকারি বাড়ির জন্য এই পর্যন্ত কতজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আবেদন করেছেন জানতে চাইলে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মো. শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমার মনে হচ্ছে ২০ থেকে ২২ জন আবেদন করেছেন। কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত মানবকণ্ঠকে সরকারি আবাসন পরিদপ্তর জানিয়েছে আমাদের কাছে মাত্র ৮ জনের দরখাস্ত আসছে। অনেকে করছে সেই দরখাস্তগুলো আসতে সময় লাগতে পারে। অন্যদিকে নতুন সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের থাকার জন্য বাসস্থান হিসেবে সবারই প্রথম পছন্দ সরকারি বাংলোবাড়ি।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে এরই মধ্যে মন্ত্রিসভার অন্তত ২০-২২ সদস্য বাংলোবাড়ি বরাদ্দের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তরে লিখিত ও মৌখিকভাবে চাহিদার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি আগের মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রীও একটি বাড়ি তার নামে বহাল রাখার আবেদন করেছেন। তবে বাস্তবতা হলো, এত সংখ্যক বাংলোবাড়ি সরকারের হাতে নেই। সব মিলিয়ে বাংলোবাড়ি আছে মাত্র ৯টি। এর মধ্যে একটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত। আরেকটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে বরাদ্দ থাকে। বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ অতিথি এলে সেই বাংলোবাড়িতে তাদের রাখা হয়। ফলে বরাদ্দ দেয়ার মতো বাংলোবাড়ি আছে মাত্র সাতটি। আর অ্যাপার্টমেন্ট আছে ৩০টি। এ অবস্থায় অনেকটা বিপাকে পড়েছে আবাসন পরিদপ্তর। জানা গেছে, এবার মন্ত্রিপরিষদে আছেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী। উপদেষ্টা আছেন ছয়জন। মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আছেন ১৪ জন। উপদেষ্টা পদে নতুন মুখ আছেন একজন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টারা বাসা বরাদ্দের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। আর মন্ত্রিসভায় না থাকলেও সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নান তার বাসাটি বহাল রাখা অথবা মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে তার থাকার জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দের আবেদন করেছেন।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, লিখিতভাবে বাসা বরাদ্দের জন্য আবেদনকারীর মধ্যে আরো আছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তারা সবাই বাংলোবাড়ির জন্য আবেদন করেছেন। মন্ত্রিসভায় বহাল থাকা কয়েকজন আগের বাসাতেই থাকতে আগ্রহী। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শুধু একজনের বাসা নির্ধারিত। সেটি যিনি যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন, তিনি ওই বাড়িতে উঠবেন। ইস্কাটনের ৩৭ বিআইডিসি হাউস নামে এ বাড়িতে এখন আছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ৩৪ মিন্টো রোডের বাড়ি ছেড়ে এ বাড়িতে উঠবেন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে আরেকটি বাড়ি বরাদ্দ থাকবে বিদেশি অতিথিদের জন্য, যেটি বর্তমানে ড. মোমেনের নামেই বরাদ্দ আছে।
অন্যদিকে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান হেয়ার রোডের ছায়াবীথি-৫ নম্বর বাড়িতে আছেন। মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ায় তিনি মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে একটি অ্যাপার্টমেন্টের জন্য আবেদন করেছেন। এ প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছিউদ্দিন বলেন, ‘উনি আবেদন করতেই পারেন। তিনি মনে করেন, ওই এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো। এটি দোষের কিছু না। তিনি বাসা ভাড়া পরিশোধের শর্তে আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে কাজী ওয়াছিউদ্দিন বলেন, লিখিত আবেদনের বাইরে আরও সাত-আটজন ফোনে বাড়ি বরাদ্দের তাগিদ দিয়েছেন। বরাদ্দ দেয়ার মতো বাংলোবাড়ি আছে মাত্র সাতটি। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বাড়িগুলো বরাদ্দ দেয়া হবে।
আবাসন পরিদপ্তরের পরিচালক শহিদুল ইসলাম ভূঞা বলেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বাসা ছাড়ার পর সেই বাসাগুলো মেরামত করে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের বরাদ্দ দেয়া হবে। এ জন্য মাস দুয়েক সময় লাগবে। এদিকে, নবগঠিত মন্ত্রিসভায় পুরনো ১৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বাদ পড়লেও একজন ছাড়া সরকারি বাসা ছাড়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কারও হেলদোল নেই। যিনি বাসা ছাড়ার ব্যাপারে সাড়া দিয়েছেন কেবল সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বাকি ১৪ জন আগের সরকারি বাসাতেই থাকছেন।
যারা বাসা ছাড়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যারা এখনো জানাননি, তারা হলেন-সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর, সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। কয়েকজন মনোনয়ন পেলেও জয়ী হতে পারেননি।
সাবেক মন্ত্রীর দখলে দুই অ্যাপার্টমেন্ট: সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ ২০১৯ সালে মন্ত্রী হওয়ার পর বেইলি রোডের মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টের ১ নম্বর ভবনের ছয়তলার পশ্চিম পাশে ৫ হাজার বর্গফুটের একটি বাসা বরাদ্দ পান। তবে এর বাইরে মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টের ৩ নম্বর ভবনের পঞ্চম তলার পূর্ব পাশে ৫ হাজার বর্গফুটের আরেকটি বাসা বরাদ্দ নেন। এবার তিনি লালমনিরহাট-২ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। তিনিও দুটি বাসার কোনোটিই ছাড়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখাননি।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পান: পঞ্চমবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। গত ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথগ্রহণ করেন আওয়ামি লীগের সভাপতি। সঙ্গে শপথগ্রহণ করেন ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৩৭ জনকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয় কোন মন্ত্রীর হাতে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গাড়ি, বাড়ি, চিকিৎসা খরচসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা আছে দ্য মিনিস্টার্স, মিনিস্টার্স অভ স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার্স (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অ্যাক্ট-এ।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পান:
বেতন: নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশের একজন পূর্ণমন্ত্রী মাসে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বেতন পান। প্রতিমন্ত্রীরা বেতন পান ৯২ হাজার টাকা। আর উপমন্ত্রীর বেতন ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা।
চিকিৎসা ব্যয়: মন্ত্রিসভার সদস্যদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ বহন করে থাকে বাংলাদেশ সরকার। সর্বোচ্চ চিকিৎসা ব্যয় কত হবে, তার কোনো সীমারেখা নেই। তবে খরচের ভাউচার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে।
বিমান খরচ: বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা বছরে ১০ লাখ টাকার বিমা সুবিধা পান। ৪. বাসভবন: মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন বরাদ্দ দেয়া হয়। কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী যদি সরকারি বাসভবনের পরিবর্তে ভাড়াবাড়ি বা নিজের বাড়িতে থাকেন, তাহলে তাকে অর্থ প্রদান করা হয়। মাসে বাড়িভাড়া বাবদ পূর্ণমন্ত্রীদের ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়; আর প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পান ৭০ হাজার টাকা। নিজের বাড়িতে থাকলে বাড়ি সংস্কারের টাকাও দেয়া হয়।
বাড়ি সাজানোর ভাতা, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাস বিল: সরকারি বাড়ি সাজসজ্জা করতে একজন মন্ত্রী বছরে ৫ লাখ টাকা পান; প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পান ৪ লাখ টাকা করে। এছাড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বাড়ির বিদ্যুতের বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল বাবদ যা খরচ হয়, সেটার পুরোটাই দেবে সরকার।
ভ্রমণ ও আপ্যায়ন ভাতা: কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী যদি বাংলাদেশের কোনো জায়গায় যান, তাহলে তাদের ভাতা দেয়া হয়। একজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দেশের ভেতরে কোথাও ভ্রমণে গেলে দৈনিক ২ হাজার টাকা করে ভ্রমণ ভাতা পান; আর উপমন্ত্রী পান ১৫০০ টাকা করে। আপ্যায়ন ভাতা হিসেবে মন্ত্রীদের মাসে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়, আর প্রতিমন্ত্রীদের জন্য ৭,৫০০ টাকা ও উপমন্ত্রীদের জন্য ৫০০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ: নিজের এলাকার মসজিদ, মন্দির উন্নয়নসহ এলাকার মানুষের দাতব্য কাজে একজন মন্ত্রী বছরে ১০ লাখ টাকা করে পান। আর প্রতিমন্ত্রী এ খাতে পান ৭ লাখ ৫০ হাজার ও উপমন্ত্রী পান ৫ লাখ টাকা করে। এলাকার উন্নয়নে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের এই টাকার কোনো অডিট হয় না।
গাড়ি, মোবাইল ফোন, জ্বালানি খরচ: একটি সরকারি গাড়ি, মোবাইল ফোন দেয়া হয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের। এ ছাড়া সরকারি প্রয়োজনে বিশেষ করে নির্বাচনী এলাকায় ভ্রমণের সময় তারা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেকোনো সংস্থা বা দপ্তর থেকে একটি জিপ গাড়ি পাবেন। গাড়ির জন্য জ্বালানির টাকাও দেয়া হবে তাদের। তবে যত জ্বালানি তেল খরচ হবে, সেটা পুরোটা দেয়া হবে না। দিনে সর্বাধিক ১৮ লিটার তেলের খরচ বহন করবে সরকার।