মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, ২০০১-০২ সালে ইলিশ উৎপাদনের যে প্রবৃদ্ধি ছিল এবং ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিলেন, সে সময়ের তুলনায় বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি। এ প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণেরও বেশি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা, সদিচ্ছা এবং একটি জাতিকে গড়ে তোলার প্রয়াসের জন্য এটি হয়েছে। বর্তমানে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন। গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩- এর মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আব্দুর রহমান বলেন, ইলিশ যেমন আমাদের গৌরবের জায়গা, তেমনি ইলিশ জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও একটা বড় ক্ষেত্র। তাই এটিকে লালন-পালন, পরিচর্যা এবং বিভিন্ন গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এটিকে আরও বেশি উৎপাদন বাড়ানো এবং এটিকে সত্যিকার অর্থে একটি বড় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেই আমরা এগোতে চাই। যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখলে ইলিশ উৎপাদনে আরও প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।
ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে ইলিশের অভয়াশ্রম কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সে জায়গাগুলো উত্তরণ করা দরকার। ইলিশের বিচরণপথ সুগম ও নিরাপদ করতে হবে। তা না হলে ইলিশের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রকৃত মৎস্যজীবীদের একটা সুনির্দিষ্ট তালিকা করা জরুরি। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এছাড়া মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনকে দায়িত্ব নিয়ে সুষ্ঠুভাবে তা পালনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। জাটকা নিধন বন্ধ করতে হবে এবং কেউ অবৈধ জাল ব্যবহার করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি অভয়াশ্রম সম্পৃক্ত এলাকার জেলে ও মৎস্যজীবীদের নিয়ে সামাজিক ক্যাম্পেইন করতে হবে। মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে তাদের জন্য ভিজিএফের পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এ সময় মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দ্বিগুণ লাভ করার মানসিকতা পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান মাসুদ আরা মমি। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলী এবং নৌপুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শফিকুল ইসলাম।
মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সম্পৃক্ত নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার ভিডিপির প্রতিনিধিগণসহ ইলিশ সংক্রান্ত বিভিন্ন অংশীজনরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।