বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেছেন, ‘যারা সৎভাবে ব্যবসা করবে, তাদের সব ধরনের সহায়তা করা হবে। তবে যারা মজুতদারি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে সরকার একটুও পিছপা হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তাজমহল রোডে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে এক কোটি পরিবার কার্ডধারীর মধ্যে চলতি জানুয়ারি মাসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, \’ডিলাররাও (সরবরাহকারী) যাতে জবাবদিহির আওতায় আসে, সে জন্য প্রতিবছর তাদের নিয়োগ নবায়ন করা হবে।\’ এছাড়া পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে যেসব মজুতদার নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো বা বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করবেন তাদের ব্যাপারে কঠোর হবে সরকার- বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, \’আগামী রমজান পর্যন্ত টিসিবির জন্য আমাদের পণ্য মজুতের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। রমজান পর্যন্ত টিসিবির কোনো পণ্যের সমস্যা হবে না।\’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, \’টিসিবির মাধ্যমে আমরা রমজানে পাঁচটি পণ্য দেবো। এখন দিচ্ছি তেল, চিনি, ডাল, চাল- এই চারটি আইটেম। সারা বাংলাদেশে এক কোটি পরিবার এই চারটি আইটেম পাবে। প্রধানমন্ত্রী প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে আমাদের বলেছেন, ঢাকা শহর ও এর আশেপাশে যেসব শ্রমিক বসতি এলাকা আছে সেখানে যেন ফোকাস করা হয়।\’
তিনি বলেন, \’আমরা খেটে খাওয়া মানুষদের টিসিবির পণ্যের আওতায় আনতে চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের একটা দায়িত্ব আছে। আমরা সাত হাজার ৭০০’র বেশি ডিলারের মাধ্যমে টিসিবির কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করি। তা না হলে এটি সম্ভব হতো না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে টিসিবির পণ্যের সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করা হয়।\’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, \’আমরা এক কোটি স্মার্ট কার্ড দেবো। ২০ লাখ কার্ড প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেটি আমরা বিতরণ করবো। আগামীতে আমরা সবাইকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবো। আমরা টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু করেছিলাম ট্রাকের মাধ্যমে। সেখান থেকে দোকানে এসেছি। পরবর্তী সময়ে এটি যেন ন্যায্যমূল্যের দোকানের মতো হয়। বিশেষত কর্মজীবীরা যেন বিকেলেও ন্যায্যমূল্যে পণ্য নিতে পারেন আমরা সে ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে আসবো।\’
আহসানুল ইসলাম টিটু আরও বলেন, \’আমরা পোশাকশ্রমিকদের জন্য আলাদা কার্ডের ব্যবস্থা করবো। একই সঙ্গে ডিলারদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রতি বছর তাদের নিয়োগ ও নবায়নের ব্যবস্থা রাখবো। জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করবো, তারাও যেন এই কার্যক্রমটা মনিটরিংয়ের মধ্যে নিয়ে আসেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগটা যেন সফল হয়।\’
তিনি বলেন, আমরা সুযোগ-সুবিধা তৈরির মাধ্যমে যারা বাজার ব্যবস্থাপনায় যুক্ত আছেন তাদের কনফিডেন্সে নিয়েই কাজ করতে চাই। ভয়-ভীতি, জরিমানা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য উৎপাদন এবং রপ্তানিকারকদের থেকে রিটেইলারের মাধ্যমে ভোক্তার কাছে সহজে সব পণ্য পৌঁছে দেওয়া। এটি নিশ্চিত করাই আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা সৎভাবে ব্যবসা করবেন তাদের সব ধরনের সহযোগিতা সরকারের তরফ থেকে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। তবে রমজান সামনে রেখে যারা কারসাজি বা পণ্য মজুত করে বাজারে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করবেন তাদের ব্যাপারে কঠোর হতে একটুও পিছপা হবো না।