মন্ত্রিসভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা আজ রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা দপ্তরে বসবেন।
দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষানীতির আলোকে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাকে অবৈতনিক অথবা স্বল্পমূল্যে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। টাকার জন্য কোনো শিক্ষার্থী যাতে নিম্ন মাধ্যমিক থেকে ঝরে না পড়ে সেই প্রয়াস থাকবে আমাদের।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশে হতদরিদ্রের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সেটাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। রোববার নতুন মন্ত্রণালয়ে যাব। এই মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি অনেক বড়। বঙ্গবন্ধু যে কল্যাণ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলেন সেই বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার কাজ এই মন্ত্রণালয়ের। অতীতে যে কাজগুলো হয়েছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ও প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে স্নেহ করতেন জানতাম, কিন্তু এতটা স্নেহ করতেন তা জানতাম না। প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। যে আস্থা রেখে তিনি আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন আমি তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, রোববার আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যাব। এরপর সবার সঙ্গে কথা বলে অগ্রাধিকার ঠিক করা হবে। একটা বিষয় নিশ্চিত করতে পারি যে, দ্রব্যমূল্যের কোনো সংকট থাকবে না। কেউ যেন কারসাজি করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকব।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এবার প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। এরমধ্যে ২৫ জন মন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রী।
নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
এ ছাড়া পূর্ণমন্ত্রীর তালিকায় থাকা ২৫ জনের মধ্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, আবুল হাসান মাহমুদ আলী অর্থ মন্ত্রণালয়, আনিসুল হক আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন শিল্প মন্ত্রণালয়, আসাদুজ্জামান খান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মো. তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মুহাম্মদ ফারুক খান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ড. হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডা. দীপু মনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সাধন চন্দ্র মজুমদার খাদ্য মন্ত্রণালয়, আবদুস সালাম পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ফরিদুল হক খান ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, নারায়ন চন্দ্র চন্দ ভূমি মন্ত্রণালয়, জাহাঙ্গীর কবির নানক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, মো. আব্দুর রহমান মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মো. আব্দুস শহীদ কৃষি মন্ত্রণালয়, ইয়াফেস ওসমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়, জিল্লুল হাকিম রেলপথ মন্ত্রণালয়, ফরহাদ হোসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, নাজমুল হাসান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সাবের হোসেন চৌধুরী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় থাকা ১১ জনের মধ্যে নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ বিভাগ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জুনাইদ আহমেদ পলক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাহিদ ফারুক পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বেগম সিমিন হোসেন রিমি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মো. মহিববুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মোহাম্মদ আলী আরাফাত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বেগম রুমানা আলী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ রয়েছেন- মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মো. আব্দুস শহীদ, নারায়ন চন্দ্র চন্দ, আবদুস সালাম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, নাজমুল হাসান পাপন, সামন্ত লাল সেন। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ রয়েছেন- বেগম সিমিন হোসেন রিমি, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মো. মহিবুর রহমান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বেগম রুমানা আলী, মো. শফিকুর রহমান চৌধুরী, আহসানুল ইসলাম টিটু।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফলে ২২২টি আসনে জয় পায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর স্বতন্ত্র ৬২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি ও অন্যান্য দল ৩টি আসনে বিজয়ী হয়।