দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৯৫৯ প্রার্থীর নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্য দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর খরচের হিসাব জমা দিতে হবে আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্য।
সম্প্রতি নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট জেলা রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে প্রার্থীদের জেল জরিমানা ও দলের নিবন্ধন বাতিলের ব্যবস্থা নিতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে প্রার্থীকে ও ৯০ দিনের মধ্যে দলগুলোকে ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৯৫৯ জন প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ হয়েছে। তাদের আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হবে। যে আসনগুলোর নির্বাচন এখনো হয়নি কিংবা কোনো কারণে স্থগিত রয়ে গেছে, সেগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর গেজেট প্রকাশ হলে, সে সময় থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এসব প্রার্থীর ব্যয়ের হিসাব কমিশনে দাখিল করতে হবে। ভোটে যে দলগুলো প্রার্থী দিয়েছে, সেসব দলকে ৯০ দিনের মধ্যে দলের ব্যয়ের হিসাব দাখিল করার বিধান আছে। যদি কোনো প্রার্থী ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে প্রার্থীদের জেল-জরিমানা হতে পারে। দলগুলো হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে নিবন্ধন বাতিলের ব্যবস্থা নিতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত করেছে ইসি। বাকি ২৯৮টি আসনে বিজয়ীদের গেজেট ৯ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়। তাই, আইন অনুযায়ী আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২৯৮ আসনের সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে এবং ৭ এপ্রিলের মধ্যে সব প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ভোটার প্রতি প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় ১০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল ইসি। তবে, ভোটার সংখ্যা যাই হোক না কেন, মোট ব্যয় ২৫ লাখ টাকা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবে, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করার সুযোগ পাবে।
৫১ থেকে ১০০ জন প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা, ১০১ থেকে ২০০ প্রার্থীর জন্য ৩ কোটি টাকা এবং ২ শতাধিক প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দলের সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় করার সুযোগ ছিল। সে হিসাবে এবার সর্বোচ্চ ব্যয় করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি।