দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘৭৫ সালের পর এবারের নির্বাচন সবচেয়ে সুশৃঙ্খল, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। দুই-চারটা দল ভোটে না এলে সমস্যা ছিল না। এবারের নির্বাচন দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় আজ মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় কিছু যায়-আসেনি। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশায় ভুগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। ১২০ বছর বয়সী বুড়ো মানুষও ভোট দিতে গেছেন। আমি নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানাই। তারা অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল শপথ নেবেন নির্বাচিতরা। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হবেন। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেবেন। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলেই সরকার গঠন করা হবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তেমনি খালেদা জিয়াও করেছে। এখন তারেক জিয়া করছে। বিএনপি ১৩-১৪ সালে মানুষ হত্যা করেছে। গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে হবে। দেশের মানুষকে হাত পেতে চলতে হবে না। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষায় জাতি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হলেও পরে একটি আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
ভোট শেষে ঘোষিত ফলাফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২২টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। এছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং ৬২টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করে।