দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে আজ থেকে সারা দেশে মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে। এছাড়া ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এবারের নির্বাচনে সারা দেশে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১৪৯টি। ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
জানা যায়, এবারের নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের মধ্যে পুলিশ ১ লাখ ৮৯ হাজার, বিজিবি ৩৫ হাজার, এপিবিএন ৬ হাজার এবং আনসার-ভিডিপির ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৬৭ জন সদস্য থাকবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে বুধবার (আজ) থেকে মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী (সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী)। এ বাহিনীর সদস্যরা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবেন। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে বাহিনীগুলো এলাকাভিত্তিক মোতায়েন হচ্ছে। নির্বাচন উপলক্ষ্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আইএসপিআর জানায়, ৬২টি জেলায় সেনাবাহিনী নিয়োজিত হয়েছে। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫ উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলোা ও বরগুনা) ১৯টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী হেলিকপ্টারে করে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলোয় প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা দেবে।
এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে। এই সেল ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্বাচন ঘিরে তাদের ১ হাজার ১৫১ প্লাটুন সদস্য মেতায়েন থাকছে। এপিবিএনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারা দেশে তাদের ২০০ প্লাটুন সদস্য নির্বাচনি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন্স) আনোয়ার হোসেন জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ১ লাখ ৮৯ হাজার পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। নির্বাচনের সময় টহল দেওয়া থেকে শুরু করে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং টিম এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গেও ডিউটিতে থাকবেন তারা। মাঠে থাকবে বিজিবির ডগ স্কোয়াডও।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন থাকবে। কোনো কোনো দুর্গম এলাকার কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলোর বিষয়েও বাড়তি ফোর্স নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। তিনি আরও বলেন, কেউ নির্বাচন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে বা নির্বাচনি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।