যেসব দেশে বাল্যবিয়ের হার সর্বোচ্চ, সে দেশগুলোর কাতারে এখনো রয়েছে বাংলাদেশ।
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনব্যাপী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইউএনএফপিএ, ইউনিসেফ ও ইউএন উইমেন যৌথভাবে একটি মেটা-বিশ্লেষণের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্লেষণটিতে, কোভিড-১৯ মহামারির ফলে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার (জিবিভি) ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি বাংলাদেশের নারী, মেয়ে, শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে মোকাবিলা করছে তা তুলে ধরা হয়।
নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে জাতিসংঘের তিনটি সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টায় ‘ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও সহায়তা: জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের জন্য অপরিহার্য সেবা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের অপরিহার্য সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং সামাজিক পরিষেবার সঙ্গে ও ভুক্তভোগীদের সঠিক যোগসূত্র স্থাপনের জন্য প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়।
বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো, ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক এবং ট্রমা-অবহিত সেবা নিশ্চিত করা। এ পদ্ধতিটির মাধ্যমে নারী ও শিশু, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা সহজে ও বিনা সঙ্কোচে সহায়তা চাইতে পারবে; আর এভাবে শিশুবিয়ে, পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার (জিবিভি) ক্ষতিকর প্রথাগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিগহাম বলেন, এখনই সময় জিবিভির শিকার ব্যক্তিরা, যেসব বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় সেগুলো মোকাবিলায় একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়া ব্যাবস্থা গ্রহণ করার।
তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশুরা ভালোভাবে বেঁচে থাকার ও পূর্ণ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সেবাগুলো যাতে সময় মতো পায় তা নিশ্চিত করতে আসুন আমরা আমাদের প্রতিরোধ ও সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করে তুলি।
ইউএন উইমেনের ২০২১ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের ৯৩ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে তারা নিজেরা নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতার (ভিএডব্লিউজি) শিকার হয়েছেন অথবা অন্য এমন নারীকে তারা চেনেন, যিনি এর শিকার হয়েছেন। এছাড়া বিশ্বে যেসব দেশে শিশুবিয়ের হার সর্বোচ্চ, বাংলাদেশ এখনো সেই দেশগুলোর কাতারে রয়েছে, যেখানে ২২ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের অর্ধেকের বেশির বিয়ে হয়েছে যখন তারা শিশু ছিলেন।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ মাসাকি ওয়াতাবে, ইউএন উইমেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শ্রাবনা দত্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।