প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে রেলের সাথে কক্সবাজার সংযুক্ত হলো। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম। আজকের দিনটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটা গর্বের দিন।
আজ (শনিবার) দুপুরে দোহাজারী- কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানের কক্সবাজার ১৫ বছর আগে এমন দৃশ্য ছিল না। আগে দালান-কোঠা এত ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা এত ভালো ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এগুলো উন্নত করেছে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসি। মাত্র পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমি গ্যাস বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। ফলে পরে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। এটা আমার পক্ষে সম্ভব না, কারণ আমি কিন্তু শেখ মুজিবের মেয়ে।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন থেকে ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথের উদ্বোধন করেন। এ স্টেশনের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার।
দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১০ সালের ৬ জুলাই দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।
মেগা প্রকল্প হিসেবে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে টেন্ডার হলে দোহাজারি-চকরিয়া এবং চকরিয়া-কক্সবাজার (লট-১ ও লট-২) এই দুই লটে চীনা প্রতিষ্ঠান সিআরসি (চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন) ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান তমা কনসট্রাকশন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পায়।
কার্যাদেশ দেয়ার পর ২০১৮ সালে এই মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সেই হিসেবে অনুমোদানের ১৩ বছর ৪ মাস ৪ দিন পর প্রকল্পটির উদ্বোধন হল। এই ১০২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।