প্রথম দিনের তুলনায় ধীরে ধীরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বেড়েছে গাড়ির চাপ। ব্যক্তিগত গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করায় নিচের সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ অন্যদিনের তুলনায় কমতে শুরু করেছে। প্রথম দিন গত রবিবার মোট ২২ হাজার ৮০৫টি গাড়ি এই পথ ব্যবহার করেছে। পরদিন সোমবার ব্যবহার করেছে ২৭ হাজার ১২১টি গাড়ি। আর গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই পথে গাড়ি চলেছে ১০ হাজার ২৮১টি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত পথে চালু হওয়া ১৩টি র্যাম্পেই গাড়ি ওঠার সংখ্যা বাড়ছে। তবে কাওলা র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা এবং ফার্মগেটের র্যাম্প দিয়ে নামার চাপ বেশি। অফিস সময়কে কেন্দ্র করে সকাল-বিকেল দুই বেলা তুলনামূলক গাড়ির চাপ বেশি। তবে গণপরিবহন যাতায়াত খুবই কম।ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ৯০ শতাংশ।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার জানান, ‘গত তিন দিনেই এই পথে রাজধানীবাসীর চলাচল ক্রমে বাড়ছে। যানজট এড়িয়ে ঝামেলা ছাড়াই এই পথে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে। ফলে এই সড়ক ব্যবহারের সুযোগটা নিচ্ছে তারা।প্রতিদিন গাড়ির চলাচল বাড়ায় এই চিত্র পরিষ্কার।’
গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকে বনানী, মহাখালী, ফার্মগেটের পথে ১৪ হাজার ৩০০টি, কুড়িল থেকে বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেটের পথে তিন হাজার ১০৫টি, বনানী থেকে কুড়িল-বিমানবন্দরের পথে দুই হাজার ৯৪৪টি এবং তেজগাঁও থেকে মহাখালী, বনানী, কুড়িল ও বিমানবন্দরের পথে ছয় হাজার ৭২৮টি গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠেছে। এসব গাড়ি থেকে মোট টোল আদায় হয়েছে ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৪০ টাকা। রবিবার থেকে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫৬ ঘণ্টায় এক্সপ্রেসওয়েতে ৬০ হাজার ২৯৮টি গাড়ি চলাচল করেছে। এতে মোট ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ২৪০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে স্বস্তির হলেও নিচে নামতেই চিরচেনা যানজট। কারওয়ান বাজার যাবেন মো. হারুন। তিনি বলেন, কাওলা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে ফার্মগেট চলে এসেছি ১৫ মিনিটে। কিন্তু ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার পৌঁছাতে লেগে যাচ্ছে ৪৫ মিনিট।
গাড়িচালক মাহামুদুল ইসলাম বলেন, আগে গাড়ির যে চাপ এক দেড় ঘণ্টায় তৈরি হতো, এখন সেটা তৈরি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ মিনিটে। তবুও ভালো, অনেক জায়গার যানজট এড়িয়ে আসা যাচ্ছে।
এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার স্থান সম্পর্কে এখনো অনেকে জানেন না। ইন্দিরা রোডে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন আফরিন চৌধুরী। তিনি ভেবেছিলেন ফার্মগেট থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা যাবে। কিন্তু ওখানে ওঠার সুযোগ নেই। আফরিন চৌধুরী বলেন, ‘কোন দিক দিয়ে উঠব সেটাই বুঝতে পারছি না।’
উত্তরা থেকে ফার্মগেটমুখী যানগুলো এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা, প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাবের সামনের র্যাম্প ব্যবহার করবে। আর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামার জন্য বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশের র্যাম্প ব্যবহার করবে।
আর ফার্মগেট থেকে উত্তরামুখী যানবাহনগুলো বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর ও দক্ষিণ লেন, বনানী রেলস্টেশনের সামনের র্যাম্প ব্যবহার করবে। নামার জন্য মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের সামনে বিমানবন্দর সড়ক, কুড়িল বিশ্বরোড এবং বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনের র্যাম্প ব্যবহার করবে।