ব্রিকস সম্মেলন-২৩: আজ দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জনগণ যতদিন চাইবে ততদিন ক্ষমতায় থাকব: শেখ হাসিনা
কাতার ইকোনমিক ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - সংগৃহীত ছবি

১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যাবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা তাকে এই সফরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।

রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন নেতাকে তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হবে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস জোট গঠন করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যখন জোহানেসবার্গে থাকবেন, তখন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আয়োজন করব। এখনো সব চূড়ান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সাক্ষাৎগুলো শেষ মুহূর্তে হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে।

প্রায় ২২টি দেশ ব্রিকসের সদস্য হতে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং ৫টি আদি সদস্য দেশ নতুন সদস্য নেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ব্রিকস-এ বাংলাদেশের সদস্যপদ নিয়ে সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জবাব দেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত জেনেভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং আরও দেশকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশও যোগ দেওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু শেষ না।

ড. মোমেন বলেন, এ মুহূর্তে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, তারা কী প্রেক্ষাপটে সদস্য নেবেন, কী কী হবে-সেজন্য তারা একটা মোডালিটি (কর্মপদ্ধতি) তৈরি করবেন। এ ব্যাপারে আমরা তাড়াহুড়ো করব না।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে ব্রিকস ব্যাংকে আমরা যোগদান করেছি। ব্রিকস হ্যাভ অ্যা লার্জ অ্যামাউন্ট-তাদের প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। এখন যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদের অনেকেই ইদানীং খুব একটা সাহায্যে আসছে না। ব্রিকসে অংশগ্রহণ করতে পারলে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা পাব। আফ্রিকায় আমাদের ভালো সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আফ্রিকার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বাড়াতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এ সফর অত্যন্ত ব্যস্ততার কারণ হবে।২৩ আগস্ট, তিনি “বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট”-এ মূল বক্তৃতা দেবেন, যা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দ্বারা সহ-আয়োজক হচ্ছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকান দেশগুলোতে বাংলাদেশী দূতাবাসের পরিকল্পনায় ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে’ অংশ নেবেন।

একই দিন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ কয়েকটি ব্রিকস সদস্য দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যায় ব্রিকসের বর্তমান সভাপতি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন।

২৪শে আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ, ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নতুন অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশকে ভাষণ দেবেন। এখানে ৭০ টি বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।

একই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ কর্মসূচিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা আবদুল মোমেন এবং অন্যান্য শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ২৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোহানেসবার্গ থেকে তার জন্মভূমি বাংলাদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে।