শেখ হাসিনা হারলে ভারত বেকায়দায় পড়তে পারে: দ্য হিন্দু

আজ হাসিনা-মোদি উদ্বোধন করবেন ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি - ফাইল ছবি

বাংলাদেশে জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ব দৃশ্যপট হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও, শেখ হাসিনা হারলে প্রতিবেশী দেশ ভারত বেকায়দায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু।

লেখক প্রণয় শর্মার বিশ্লেষণধর্মী গবেষণা অনুসারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা থেকে বিদায় কেবল ভারতের জন্য উদ্বেগের নয়, এতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।। আঞ্চলিক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে।

হিন্দু জানিয়েছে যে, প্রায় এক দশক ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি শক্তিশালী, বিশ্বস্ত এবং নির্ভরতার সম্পর্ক তৈরি করেছেন, যা দুই দেশ এবং এ অঞ্চলের জন্যই মঙ্গলজনক। ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাদের মুসলিম-বিদ্বেষী এবং বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যকে শেখ হাসিনা যে পাত্তা দেননি-এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।

সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর দেওয়া বক্তব্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থেকে একটি সহযোগিতা এবং নিরাপত্তামূলক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। যেই সম্পর্কে মানুষের সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ একটি প্রভাবক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’

সাবের হোসেন চৌধুরীর মতে, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার দুই পক্ষের মধ্যে একটি উইন-উইন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং উভয় দেশের সরকারই অগ্রগতি, উন্নতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল।

দ্য হিন্দুর মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার এই সম্পর্কের মাধ্যমে দিল্লি এমন একটি উদাহরণ তৈরি করতে সম্মত হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলে প্রতিবেশীরা কীভাবে সুফল পেতে পারে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিল। তবে, দ্বিমুখী অংশীদারিত্ব শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গে যায়। বাংলাদেশের অনেক ক্ষমতাসীন দল তার মাটিতে সক্রিয়ভাবে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ প্রচার করেছে। যাইহোক, শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল হয় এবং ভারতের প্রতি বিদ্বেষী সংগঠনগুলিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়। যাইহোক, নয়াদিল্লি এবং ঢাকা উদ্বিগ্ন যে বিডেন প্রশাসনের দ্বারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি সেই অংশীদারিত্বকে দুর্বল করতে পারে।

প্রতিবেদনের শেষ দিকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা যদি নির্বাচনে হেরে যান, তাহলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা দীর্ঘায়িত হতে পারে। এমনকি আবারও বাংলাদেশ উগ্রবাদীদের আঁতুড় ঘরে পরিণত হতে পারে। ফলে আওয়ামী লীগের প্রস্থানের বিষয়টি শুধু ভারত নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য দুর্ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।