ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশের যেসব এলাকায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দ্রুতই সেগুলো মেরামতের কাজ শুরু হয়ে গেছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন। আজ সোমবার (১৫ মে) বিকালে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে আমরা রক্ষা পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়াসহ যে যখনই ক্ষমতায় এসেছে তারা নদীগুলো দখল করেছে। আমরা এসে নদীগুলো রক্ষা করেছি। দখলদাররা এতোটাই অর্থশালী ও বিত্তশালী যে এসব জায়গায় হাত দেওয়া যায় না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিদেশীয় সফরের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে গত ২৫ এপ্রিল টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিসিদার আমন্ত্রণে জাপান সফরে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের ওপর স্যাংশন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে, তারা কাছ থেকে আর কোনো পণ্য কেনা হবে না। আমরা এখন কারও ওপর নির্ভরশীল নই। নিজেদের পণ্য আমরা উৎপাদন করতে পারি।’
টোকিওতে অবস্থানকালীন শেখ হাসিনা এবং তার জাপানি সমকক্ষ কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প-উন্নয়ন, জাহাজ-রিসাইক্লিং, কাস্টমস বিষয়, মেধা সম্পদ, প্রতিরক্ষা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে সই হওয়া ৮টি চুক্তি বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন, যার বেশিরভাগই সমঝোতা স্মারক।
শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য গত ২৭ এপ্রিল ৪ জাপানি নাগরিকের কাছে \’ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার\’ হস্তান্তরের পাশাপাশি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং কমিউনিটি সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
তিনি একইসঙ্গে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির পাশাপাশি জাইকা, জেইটিআরও, জেইবিআইসি, জেবিপিএফএল ও জেবিসিসিসিইসির নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন।
সফরের দ্বিতীয় ধাপে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পাশাপাশি তিনি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে একটি গোলটেবিল বৈঠক এবং বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভারের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া তিনি একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
লন্ডনে তার সফরের তৃতীয় ধাপে প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কমনওয়েলথ রাজ্যের রাজা ও রানি হিসেবে চার্লস তৃতীয় এবং তার পত্নী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং তার স্ত্রী সুসানা স্পার্কস ও লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে তার অবস্থানস্থলে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানী জেসুন পেমার সাথে বৈঠক করেন।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর অবস্থানস্থলে সাক্ষাৎ করেন। শেখ হাসিনা ৯ মে দেশে ফিরেছেন।