ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে (আইওসি) যোগ দিতে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ সিং রূপন চার দিনের সরকারি সফরে আজ বাংলাদেশে আসছেন। তার স্ত্রী সযুক্তা রূপনও পৃথ্বীরাজের সফরসঙ্গী হচ্ছেন।
আইওসি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার পৃথক কোনো সাক্ষাৎ নেই। তবে আইওসি সম্মেলনে অংশ নেওয়া অতিথিদের জন্য সরকারপ্রধানের দেওয়া নৈশভোজে থাকবেন পৃথ্বীরাজ সিং রূপন।
জানা গেছে, মরিশাসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সমুদ্র অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, তথ্যপ্রযুক্তি ও জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলাবিষয়ক সহযোগিতা প্রাধান্য পাবে। দেশটির সেবা ও অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের চাহিদা রয়েছে। মরিশাসের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের শিক্ষার্থীদের এদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। এ ছাড়াও মরিশাসে এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কৃষি খামার করতে চায় দেশটি। মরিশাসের বাজারে বাংলাদেশি পোশাক ও হস্তশিল্পের কদর রয়েছে।
মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দুদেশের মধ্যে রাজনীতি, সংস্কৃতি, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সত্ত্বেও দূরত্বের কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রত্যাশা অনুসারে বিকশিত হয়নি। দেশটিতে প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছেন। যারা দেশটির নির্মাণ, পর্যটন, মৎস্য ও রেস্তোরাঁ খাতে কর্মরত রয়েছেন। বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য খুবই কম। তবে দুদেশের সরকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০২১-২২ সালে দেশটিতে রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানি ৬ দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পৃথ্বীরাজ সিং রূপনের সফরটি হবে মরিশাসের কোনো রাষ্ট্রপতির প্রথম বাংলাদেশ সফর। ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাস বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৮ সালে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্যার সিওয়াসাগুর রামগুলাম দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় এসেছিলেন। ২০১২ সালে দেশটির পোর্ট লুইসে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। দুদেশই ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন এবং কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য।