স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি যা লিখলেন

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার সর্বপ্রথম যান জাতীয় স্মৃতিসৌধে। তিনি সেখানে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় স্যালুট দেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন এ সময় নীরবে দাঁড়িয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এরপর রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইতেও স্বাক্ষর করেন।

এসময় তিনি লিখেন, ‘আজকের এ দিনে আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎকারী বীর শহীদদের। বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে পরমতসহিষ্ণুতা, মানবিকতার ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ মো. সাহাবুদ্দিন। আইন পেশা, বিচারালয় ও দুদকে দায়িত্ব পালনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের পর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে আসীন হলেন তিনি।

গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তিনি শপথ নেন। রাষ্ট্রপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শপথ অনুষ্ঠানের পর নয়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং বিদায়ি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অফিসের দায়িত্ব পরিবর্তনের অংশ হিসাবে নিজ নিজ আসন বদল করেন। পরে আবদুল হামিদকে মহাসাড়ম্বরে, পুষ্পবৃষ্টিতে বিদায় জানানো হয়।

রাষ্ট্রীয় এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং শতাধিক বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

এদিন রাত ৮টা ৫০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে বরণ করে নেয় বঙ্গভবন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ছেলে দুই নাতি এবং পরিবারের কাছের স্বজন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে নিজ দপ্তরে কিছু সময় অতিবাহিত করেন এবং কিছু ফাইলে সই করেন।