আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেফাজতের ঘাঁটি হাটহাজারী মাদ্রাসায় যাচ্ছেন

আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দুপুর ১২টার দিকে তিনি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। হাটহাজারী মাদরাসা হেফাজতে ইসলামের ঘাাঁটি হিসেবে পরিচিত।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রামে ফটিকছড়ির জামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসায়ও যাবেন বলে জানা গেছে।

কওমি ঘরানার এবং হেফাজতে ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধীন দুই শীর্ষ মাদ্রাসায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে হেফাজতের নায়েবে আমির ও জামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসার মহাপরিচালক সালাহউদ্দিন নানুপুরী দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাকে বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। মন্ত্রীকে আমি দাওয়াত করেছি। তিনি নানুপুর মাদরাসা পরিদর্শন করবেন এবং আমার আব্বা জমির উদ্দিন নানুপুরীর কবর জেয়ারত করবেন। এরপর তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসায় যাবেন। সেখানে তিনি ইফতার করবেন।

হেফাজতের সঙ্গে কোনো বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হেফাজতের কোনো বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি আসছেন না। এমনি সবার সঙ্গে কথা হবে।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপু ওই পত্রিকাকে বলেন, মন্ত্রী দুটি মাদ্রাসায় যাবেন। হেফাজতের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফী হুজুরের কবর জেয়ারত করবেন। হেফাজতের সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো বৈঠক নয়, এমনি সবার সঙ্গে কথা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সূচির মধ্যে রয়েছে- বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে তিনি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। এরপর তিনি সরাসরি ফটিকছড়ির জামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসায় যাবেন। সেখান থেকে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসায় যাবেন। হাটহাজারী মাদ্রসায় ইফতার শেষে সন্ধ্যা ৭টায় মন্ত্রী শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশে আসার কথা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। সেসময় তার আগমনের বিরোধিতা করে আন্দোলনের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম। ওই বছরের ২৬ মার্চ সারাদেশে বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই বিক্ষোভে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চারজন নিহত হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে দুদিন পর ২৮ এপ্রিল সারা দেশে হরতাল ডাকা হয়। এসব আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অগ্নিকাণ্ডসহ নাশকতা চালানো হয়। একপর্যায়ে তাদের ওপর চড়াও হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একের পর এক গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের। ওই বছরের ১১ এপ্রিল হেফাজতের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে এসব ঘটনার পর দীর্ঘদিন চুপসে থাকা হেফাজত সম্প্রতি সক্রিয় হয়। তারা সমঝোতার জন্য সরকারের শীর্ষ মহলে যোগাযোগ করতে থাকে। সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দলটির নেতারা একই দাবি জানান।