পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা চাই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমেরিকাও চায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- এমন বার্তা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে পৌঁছানো হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে। এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন বলে জানান। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন নিয়ে জাপানি চিত্রকলা ‘মাঙ্গা’ ফর্মে কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন এ কে আব্দুল মোমেন।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের উন্নয়ন মহাসড়কের লক্ষ্যে আমেরিকা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। দুই বছর কোভিডের জন্য আমাদের আনাগোনা কম ছিল। আর আমাদের সম্পর্কেরও উন্নতি হয়েছে। আমি আগামী শুক্রবার যাবো। তাদের দাওয়াত আমি সানন্দে গ্রহণ করেছি।
সফর সম্পর্কে মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন। আমরা খুব ভাগ্যবান। কারণ পর পর তিনবার তার দাওয়াত পেলাম।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধুদেশ আখ্যা দিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু দেশ। তারা আমাদের বড় বিনিয়োগকারী দেশ। সেখানে আমাদের অন্যমত রপ্তানি গন্তব্য।
নির্বাচন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কী আলোচনা হবে এ প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি। আগে ভুয়া হতো। এখন যেন না হয়, সেজন্য আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। নির্বাচন কমিশনের দ্বায়িত্ব হচ্ছে স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান। সরকার অবশ্যই কমিশনকে সাহায্য করবে।
এ সময় তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সাহায্য ছাড়া সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই সব দলকেই সহযোগিতা করতে হবে।
নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করবো। কারও অন্য ধরণের কোনো চিন্তা থাকলে ভুল চিন্তা। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাসী।
বাংলাদেশকে অন্য দেশের গণতন্ত্র শেখানোর প্রয়োজন নেই মন্তব্য করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছি। ৭০-৭১ সালে যখন গণতন্ত্র প্রত্যাখ্যাত হয়, তখন আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছে গণতন্ত্র সমুন্নত করার জন্য। সে কারণে আমাদের অন্যদের গণতন্ত্র শেখানোর প্রয়োজন নেই। এটা আমাদের হাড়ে হাড়ে। আমাদের রক্তেই গণতন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা একমাত্র দেশ যারা কোভিডকালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১০০ মিলিয়নের বেশি টিকা দিয়েছে। আমরা টিকা অন্য জায়গা থেকে কিনেছি। আর তারা বাড়িতে টিকা পৌঁছে দিয়েছে। রোহিঙ্গারা আসার পর যে দেশ সবচেয়ে বেশি পাশে দাঁড়িয়েছে, সেটি আমেরিকা। অন্য দেশও অবশ্য সহায়তা করেছে। তবে আমি সেই দেশে যাচ্ছি। এসব কাজের অবশ্যই প্রশংসা করবো।
প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের কথা রয়েছে।