পদ্মা সেতুতে ৪ এপ্রিল চলবে পরীক্ষামূলক ট্রেন

পদ্মা সেতুর মাওয়া-ভাঙ্গা সংযোগ রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে একটি বিশেষ ট্রেন আগামী (৪ এপ্রিল) চালানো হবে বলে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ ৪ এপ্রিল। আর জুনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন। ওই অংশের ৩২ কিলোমিটার রেললাইনে রেল ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে আগেই। ইতোমধ্যে রেল সেতুর প্রায় ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল সেতুতে রেললাইন স্থাপন প্রায় শেষ। সাত মিটারের স্প্যান বসানো কেবল বাকি। ভায়াডাক্টের উপর পাথরবিহীন সাড়ে ছয় কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন হচ্ছে মূল সেতুতে।

এর আগে প্রকল্পটির পরিচালক আফজাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত একটিট বিশেষ ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু সংযোগ রেলপথে একটি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছিল।

আফজাল হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পটি জুন, ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। আমরা ইতোমধ্যে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। রেল সংযোগ নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’ তিনি বলেন, ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন দিয়ে যশোরের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, চীনের এক্সিম ব্যাংক ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ দেবে। চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড চায়না জিটুজি সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পটি সম্পন্ন করার পর, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা এবং পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলার নতুন এলাকা জুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-খুলনার মধ্যে ২১২.০৫ কিলোমিটার সংক্ষিপ্ত রুট এবং উন্নত পরিচালন সুবিধার বিকল্প রেলপথ সংযোগ স্থাপিত হবে। এটি বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি সাব-রুট স্থাপন এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালবাহী এবং বিজি কন্টেননার ট্রেন পরিষেবা চালু করবে। এই রুটটি কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে গতি এবং লোড সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে। সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন দেয় এবং এটি একটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়।