মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, বিদ্যমান আইন সংযোজন-বিয়োজন করে প্রণয়ন করা আয়কর আইন, ২০২৩-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
তিনি আজ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, এই আইনের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন জমাসহ সার্বিকভাবে কর দেওয়ার কাজটি সহজ করা হচ্ছে। বিশেষ করে এখন ব্যবসায়ীদের যত কাগজপত্র জমা দিতে হয় তার সংখ্যা কমবে। এ ছাড়া, কর কর্মকর্তাদের ‘স্বেচ্ছাক্ষমতা’ও কমানো হচ্ছে।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাহবুব হোসেন বলেন, আয়কর সংক্রান্ত মূল আইনটি ১৯২২ সালের। পরে ১৯৮৪ সালে এটি অধ্যাদেশ আকারে সংশোধন করা হয়। এটি ইংরেজিতে আছে। এখন সেটি বাংলায় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে কিছু সংযোজন বিয়োজন করা হয়েছে এবং কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। আগে অন্তত ২০টি ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা যেভাবে যৌক্তিক মনে করতেন সেভাবে নির্ধারণ করতে পারতেন। এখন আর সেটি হবে না। এখন একটি গাণিতিক পদ্ধতি (ফর্মুলা) দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতি অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। তাই, কর্মকর্তারা ইচ্ছে করলেই আয়কর বাড়াতে বা কমাতে পারবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি বা যেসব কাগজ-পত্র জমা দিতে হয় বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে, সেগুলো সংস্কার করা হয়েছে। আর আয়কর পদ্ধতি যে আইসিটি নির্ভর করা হচ্ছে সেটিকে প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদ্যমান আইনে কেবল উৎসে কর কর্তন সর্ম্পকিত ২৯টি রিটার্ণ ও বিবরণী (কাগজপত্র) দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটি অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে প্রস্তাবিত আইনে ১২টি করা হয়েছে। বৈঠকে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইনের খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সহায়তা কার্যক্রম প্রকল্পের পরিবর্তে এজেন্সির মাধ্যমে চলবে। এটুআই হবে অনেকখানিই স্বশাসিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে ২০২২ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভা বৈঠক সম্পর্কিত কার্যক্রমের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সময়ে মন্ত্রিসভার ৬টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ৯০টি এবং এর বাস্তবায়িত হয়েছে ৬১টি। বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্ত রয়েছে ২৯টি। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, অনুমোদিত নীতি ও কর্মকৌশল রয়েছে ২টি, অনুমোদিত চুক্তি ও প্রটোকল রয়েছে ১১টি এবং সংসদে পাশ করা আইন রয়েছে ৪টি।
মাহবুব হোসেন বলেন, যে আইনগুলো যুগোপযোগী করার জন্য মন্ত্রিসভায় পেশ করা হয়েছে, কিন্তু এখনো কমপ্লিট হয়নি, সে আইনগুলোকে দ্রুত পাশ করানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বেশির ভাগ আইন ইতোমধ্যে যুগোপযোগী করে সংসদে পাশ করা হয়েছে। এখনও ১০ থেকে ১২টি আইন সম্পূর্ণ করা হয়নি। এই আইনগুলোও সংসদে পাশ করার কাছাকাছি পর্যায়ে আছে।