মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের ঢাকায় পৌঁছেছেন। সফরে দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় আলোচনা করতে তিনি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছান।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডোনাল্ড লুকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল (আমেরিকা উইং) নাঈম উদ্দিন আহমেদ। এরপর তিনি সেখান থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেনের বাসায় যান।
দুদিনের সফরে তিনি বৈঠক করবেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। এ ছাড়া সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন মার্কিন সরকারের এই প্রতিনিধি। সফরে আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে।
দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে লু বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে মার্কিন দূতাবাসের এক টুইটে বলা হয়েছে।
আগামীকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে ডোনাল্ড লু প্রাতঃরাশ বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বৈঠকে ডোনাল্ড লু দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনীতি, মানবাধিকার এবং ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন।
এর আগে সদ্যসমাপ্ত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এইলিন লাউবেখারের সফর বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে। ফলে লাউবেখারের সফরই ইঙ্গিত দেয়, ডোনাল্ড লুর সফর ফলপ্রসূ হতে যাচ্ছে।
ডোনাল্ড লুর সফরে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আর ঢাকার পক্ষ থেকে র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীকে ফেরত নিয়ে আসাসহ একাধিক বিষয় আলোচনায় রাখা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা হচ্ছেন ডোনাল্ড লু। ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকেছিলেন তিনিই। পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর হাত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ অভিযোগ প্রকাশ্যে করেছিলেন ইমরান খান নিজেই।
ডোনাল্ড লু মার্কিন প্রশাসনে কাজ করছেন ৩০ বছরের ওপরে। ২০২১ সালে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি কিরগিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি আলবেনিয়ায়ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ভারতে মার্কিন দূতাবাসে উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সফরের আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে এই মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফর করেন।