বিতর্ক সমাধানে প্রধান বিচারপতি সরে যাবেন : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী রায়ের পর যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানে প্রধান বিচারপতিকে নিজেই সরে দাঁড়াতে হবে।

আজ শুক্রবার সকালে চারুকলা ইনস্টিটিউটে শেখ কামাল ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্ম দিবস উপলক্ষে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী সমরজিৎ রায় ও চারুকলা ইনস্টিটিউটের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি চিফ জাস্টিস, প্রধান বিচারপতি, যেহেতু বিতর্ক তৈরি করেছেন, সরকার বিতর্ক তৈরি করেনি, যেহেতু উনি সংসদের প্রতি তির্যক মন্তব্য করেছেন, সেহেতু মাননীয় প্রধান বিচারপতি এটার সমাধান করার জন্য পুনর্বিবেচনার পদ্ধতি অনুসরণ করবেন এবং উনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে নিজেই নিজেকে সরিয়ে নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করে দেবেন।’
গত ১ আগস্ট বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ সাত বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ৭৯৯ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইনসভার কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রয়েছে। দেশের সংবিধানেও শুরুতে এই বিধান ছিল। তবে সেটি ইতিহাসের দুর্ঘটনা মাত্র। রায়ে আরো বলা হয়, কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর ৬৩ শতাংশের অ্যাডহক ট্রাইব্যুনাল বা ডিসিপ্লিনারি কাউন্সিলরের মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের বিধান রয়েছে।
আদালত রায়ে আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদের ফলে দলের বিরুদ্ধে সাংসদরা ভোট দিতে পারেন না। তাঁরা দলের হাইকমান্ডের কাছে জিম্মি। নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা নেই। ৭০ অনুচ্ছেদ রাখার ফলে সাংসদদের সব সময় দলের অনুগত থাকতে হয়। বিচারপতি অপসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও তাঁরা দলের বাইরে যেতে পারেন না। যদিও বিভিন্ন উন্নত দেশে সাংসদদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা আছে।

পর্যবেক্ষণে আদালত চলমান সংসদকে ‘অপরিপক্ব’ বলেও উল্লেখ করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়, যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০  ঘণ্টা, ২৫ আগস্ট ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি

Scroll to Top