অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় আছে, কোন স্টেজে সেটা দেখার জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন। তারা প্রাণখুলে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এ অর্জনগুলো একে একে হয়নি, শুধু সরকারের হাত দিয়েও হয়নি। করদাতাদের বড় অবদান রয়েছে। আমাদের এগিয়ে যেতে দেশের সবার অংশ নিতে হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে জাতীয় ভ্যাট দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন
এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। অনুষ্ঠানে এ বছরের ভ্যাট সম্মাননাপ্রাপ্ত ৯টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের হাতে সম্মাননাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে অর্জন তা সরকারের একক অর্জন নয়। এক হাতে এটি হয়নি। দেশের সব মানুষের সম্পৃক্ততায় এই অর্জন এসেছে। সরকার করদাতাদের কাছে ঋণী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গত ১৪ বছরে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন আমাদের অর্থনীতির আকার ছিল ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো। সেটি বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। আর ৬০০ ডলারের মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২৮৬৪ ডলার। তিনি দেশকে উচ্চ মধ্যম আয় ও উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে দেশবাসীকে সঠিকভাবে কর প্রদানের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তোরণের পর রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। আমার মনে হয়-সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
তিনি বলেন, মূল্য সংযোজন হয় এমন পণ্যের পাশাপাশি বহুমূখী পণ্য উৎপাদন করা গেলে রপ্তানি বাড়বে। একইসাথে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের প্রসার ঘটাতে পারলে রাজস্ব আয় বাড়ানো যাবে। এসবের উপযুক্ত নীতি সহায়তা এনবিআরে পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, করদাতার যেন স্বতস্ফূর্তভাবে কর প্রদানের পরিবেশ পায়, সেই লক্ষ্যে অটোমেশনের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে। দক্ষ জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি ভ্যাট অফিস বাড়ানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন নিয়মিত যাঁরা ভ্যাট দেন, তাদের হয়রানি না করা এবং কর ব্যবস্থায় আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান। তিনি করহার হ্রাস করে কর জাল বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
এবার জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়ার তালিকায় উৎপাদন খাতে আছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ ও এসএমসি এন্টারপ্রাইজ, ব্যবসায় শ্রেণিতে গাজীপুরের ওয়ালটন প্লাজা, আগোরা লিমিটেড ও ইউনিমার্ট লিমিটেড, সেবা শ্রেণিতে বিকাশ লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক ও নগদ লিমিটেড। অনুষ্ঠানে এনবিআর সদস্য জাকিয়া সুলতানা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।