আজ উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে সংগঠনটি। সারাদেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরাও চলে এসেছেন ঢাকায়।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে সমবেত হবেন ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও পদপ্রত্যাশীরা। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। যথারীতি কাউন্সিলরদের ভোটের পরিবর্তে তিনি এবারও নেতৃত্ব বাছাই করবেন।
রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনসহ নানাবিধ কারণে ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতীম এ ছাত্র সংগঠনের এবারের নতুন নেতৃত্বের দিকে বিশেষ নজর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের। ছাত্রলীগের নেতৃত্বে কারা আসছেন, সেটির চূড়ান্ত নির্ধারক শেখ হাসিনা হলেও এ নিয়ে দলের অন্য নেতা ও রাজনৈতিক মহলে আগ্রহের কমতি নেই।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্তসহ ফরম জমা দিয়েছেন ২৫৪ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ৯৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন। তাদের মধ্যে অনেকে উভয় পদেও ফরম জমা দিয়েছেন।
সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এরই মধ্যে প্রার্থীদের আবেদনপত্র নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নতুন কমিটি হবে।
যারা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আসতে সক্রিয়
স্বভাবত ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে ব্যক্তির নেতৃত্বের যোগ্যতার পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়। যে কারণে সম্মেলন এলে আঞ্চলিক প্রার্থীদেরও তোড়জোর দেখা যায়। এবারও ফরিদপুর, বরিশাল, উত্তরবঙ্গ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের অনেক প্রার্থী সক্রিয় আছেন। কথিত আছে- ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে সবসময় নেতৃত্ব থাকেই।
তবে এবার অঞ্চল ছাপিয়ে করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে ছাত্রদের পাশে থাকা নেতারা বেশি আলোচনায়। এর মধ্যে ‘জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা’ দিয়ে সারাদেশের প্রশংসা কুড়ানো সাদ বিন কাদের চৌধুরী, অনলবর্ষী বক্তাখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং করোনায় ঢাবি ক্যাম্পাসে শ্রমজীবী মানুষকে খাবার দিয়ে প্রশংসিত তানভীর হাসান সৈকত আছেন আলোচনায়।
এছাড়াও এবার ফরিদপুর বিভাগ থেকে আছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন, আইন সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক শাহেদ খান।
বরিশাল বিভাগ থেকে আছেন ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন ও ইয়াজ আল রিয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়।
চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আছেন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, উপ-সাহিত্য সম্পাদক জয়দীপ দত্ত (জয়জিৎ), উপ-সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সহ-সম্পাদক আনফাল সরকার পমন ও মো. সোহরাব হোসেন শাকিল।
খুলনা বিভাগ থেকে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন।
ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সহ-সম্পাদক এস এম রাকিব সিরাজী আছেন আলোচনায়।
উত্তরবঙ্গ থেকে আছেন ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু ও ক্রীড়া সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিকী সুজন।
এছাড়া আলোচনায় থাকা অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করা তিলোত্তমা শিকদার, শামীম পারভেজ, এহসান উল্লাহ পিয়াল, ইমরান জমাদ্দার, নিশাদ সাদিয়া খান মিলি, আল আমিন সুজন, এম এ সোহাগ, আহসান হাবীব, আবু মুছা, সুরাপ মিয়া সোহাগ ও আশরাফুল ইসলাম ফাহাদ।