চীনা মুদ্রা ইউয়ানে লেনদেনের সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দেশটিতে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা। তবে এখনই এর সুফল কতোটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে তাদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউয়ানে লেনদেন করতে দেশটিতে রফতানি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবার সম্ভাবনা কম।
গত কয়েকমাস ধরেই সংকট চলছে ডলারের। যোগান বাড়িয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। আর এতে চাপ পড়ছে রিজার্ভের ওপর। তাই সংকট সামাল দিতে আলোচনায় আসে বিকল্প মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিষয়টি। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চীনা মুদ্রা ইউয়ানে ঋণপত্র খোলার অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নস্টো অ্যাকাউন্ডে ইউয়ান জমিয়ে লেনদেন করবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমদানি-রফতানি যেহেতু ব্যাংকের মাধ্যমে করা হয় সেজন্যই ব্যাংকগুলোকে এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তাদের যে নষ্ট একাউন্ট আছে সেখানে তারা ইউয়ান রাখতে পারবে। সেখানে চাইনিজ মূদ্রা সংরক্ষণের মাধ্যমে চীনের সাথে বাণিজ্য করতে পারবেন।
ইউয়ানে লেনদেনে আগ্রহ আছে ব্যবসায়ীদেরও। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে চীনা মুদ্রার যোগান নিয়ে। এর মূল কারণ, বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি। চীন থেকে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো পণ্য আমদানি হলেও রফতানি হয় এক বিলিয়ন ডলারের কম। তাই উদ্যোগটি ভালো হলেও এখনই কতটা সুফল পাওয়া যাবে তা সন্দেহ আছে ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের।
গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন বলেন, চায়নার সাথে আমাদের ব্যবসার পরিসর অনেক বড়। তাই, এরমাধ্যমে এই সময়ের যে সংকট তা থেকে উত্তরণ ঘটানো সম্ভব হবে। কিন্তু ডলার থেকে চেঞ্জ করে কতোটুকু লাভবান হওয়া যাবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, যেকোনো বড় কারেন্সিতে অলটার করার ক্ষেত্রে যা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ও কারেন্সির অ্যাকসেপ্টেন্স ও কনভার্টিবিলিটি। ইউয়ানের অ্যাকসেপ্টেন্স ও কনভার্টিবিলিটি ডলারের মতো অতো বেশি না। এটার সুবিধা পেতে সময় লাগবে, আমরা ওভারনাইট কিছু আশা করতে পারি না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি-রফতানির সমান অংশটুকু টাকা-ইউয়ানে লেনদেনে সম্পন্ন হলেও বাকিটা ডলারেই পরিশোধ করতে হবে। তাই এর সুফল পেতে রফতানি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
দুই দেশের ব্যবসায়ীরা একমত হলে ইউয়ানে লেনদেন সহজ হবে। না হলে ডলার অথবা অন্যমুদ্রায় দায় পরিশোধ করতে হলে নতুন ঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।