স্বপ্নের সেতুর অপেক্ষা শেষ দুয়ার খোলার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করলেন বহু কাঙ্ক্ষিত সেই পদ্মা সেতুর। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে সেতু উদ্বোধন করেন তিনি।
সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে খুলে গেল রাজধানীসহ দেশের অপর অংশের সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার দুয়ার।
মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে টোল দিয়ে গাড়িতে সেতু পার হন প্রধানমন্ত্রী। অপর প্রান্তে ফলক উন্মোচনের পর বেলা ১২টায় যোগ দেন সমাবেশে।
সেখানে আজ ভোর থেকেই নেমেছে মানুষের ঢল। দক্ষিণ বঙ্গের নানা প্রান্ত থেকে সেখানে জড়ো হচ্ছে মানুষ। এই সমাবেশে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
এর আগে আজ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে হেলিকপ্টার করে মাওয়া সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রথম সুধী সমাবেশে ভাষণ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ৪ জুলাই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর ২০১২ সালের ২৯ জুন অর্থায়ন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। ২০১২ সালের ৯ জুলাই নিজের টাকায় নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে সেতুর অবস্থান। মাওয়া ও জাজিরা উপজেলা দুটিকে সংযুক্ত করেছে সেতুটি। এ দুই অঞ্চলের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থা একান্ত প্রয়োজন ছিল। তাই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করতে কোটি জনতার সময়ের দাবি ছিল পদ্মার দুপারের সেতুবন্ধ। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে ঢাকার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার কমল। ঢাকা ও বেনাপোল স্থলবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হলো। পদ্মা সেতুতে রেললাইন থাকায় ট্রান্স-এশিয়ান রেল নেটওয়ার্ক এবং ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুর এক অংশ পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ নদীর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। একই সঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে।
চার লেন বিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেললাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।