শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে। কারণ স্প্যানগুলো যখন বসানো হচ্ছিল, সেটা তার কাছে জোড়াতালি মনে হয়েছিল। বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসরও (এভাবে বলেছিল)। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে পদ্মায় ফেলে দেওয়া উচিত।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন করার কথা থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়, এই অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা ছিল অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর যিনি একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও পদ্মায় নিয়ে দুটি চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উচিত। মরে যাতে না যান, পদ্মায় একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। কারণ, তারা তাদের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছে। তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কিন্তু তাদের নির্বাচনের ইতিহাস এতটা কলুষিত যে তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোন অধিকারই নাই। কোন মুখে তারা বলে।’
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হয়ে বলেন, ঢাকা-১০ এ ফালু (মোসাদ্দেক আলী ফালু) ইলেকশন করেছিল যে ইলেকশনের চিত্র সবার নিশ্চই মনে আছে। মাগুরা ইলেকশন হয়-যে ইলেকশন নিয়েই আন্দোলন করে আমরা খালেদা জিয়া উৎখাত করেছি। মিরপুর ইলেকশন-প্রত্যেকটা নির্বাচনের চিত্রই আমরা দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৭ সালের ‘হ্যাঁ-না’ ভোট, ’৭৮-এর রাষ্ট্রপতি এবং ’৭৯ এর সাধারণ নির্বাচন, ’৮১ এর নির্বাচন প্রত্যেকটা নির্বাচনই আমাদের দেখা। পাশাপাশি, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনেরও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থার যে উন্নয়ন সেগুলো আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত এবং চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থার আধুনিক ও যুগোপযোগিকরণে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ইভিএম ব্যবস্থা বলবৎ করারও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ সবের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার আবার জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিয়েছে।
আর জনগণের শক্তিতে ক্ষমতায় আছি বলেই জনগণের জন্য আমরা কাজ করতে পেরেছি, বলেন তিনি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেও দেশ নিয়ে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর মিডিয়াতে ঢালাও সমালোচনার ও উত্তর দেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এসময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান। পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপরেই ৬ বছর প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনা সে সময়কার সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একরকম জোরকরেই ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
সংবাদ সূত্রঃ বাসস