ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংস্কৃতির সুষ্ঠু চর্চা ও বিকাশ হলে জঙ্গিবাদ থেকে তরুণ প্রজন্ম দূরে থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন। এ সময় সাংস্কৃতিক সংঘাত তৈরি হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। যে যার যার ধর্ম পালন করব। ধর্ম যার যার- উৎসব সবার।’

আজ বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী দেশের আট জেলায় নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প-সংস্কৃতির আলোয় আলোকিত হলে মানুষ উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন হবে। সংস্কৃতির সুষ্ঠু চর্চা ও বিকাশ হলে জঙ্গিবাদ থেকে তরুণ প্রজন্ম দূরে থাকবে। দেশবাসী সবাই শিল্প-সংস্কৃতিমনা হোক, সেটাই চাই।

দেশের বিভিন্ন সংকটে ও সংগ্রামে সংস্কৃতিকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন করেছে এবং জাতিকে সাহস জুগিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবহমান কাল ধরে যে সংস্কৃতি চর্চা করে আসছি তা-ই আমরা চর্চা করে যাব। বিদেশেও বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চর্চা অব্যাহত থাকুক। বাঙালি উৎসব উদ্যাপন করায় প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা বাঙালি। আমাদের রয়েছে হাজার বছরের বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উত্তরাধিকার। জাতির পিতার জাতীয়তাবাদী ভাবনার পুরোটা জুড়ে ছিল বাঙালি সংস্কৃতি। তাই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলন করেছিলেন। নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, আত্মমর্যাদার জন্য দেশকে স্বাধীন করেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তার জগৎ জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য ও জীবনানন্দ দাশ। বাঙালি স্বভাবজাতভাবেই সংস্কৃতিমনা।‘

নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রচার, প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

আরও ১৬টি জেলায় শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ করবেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২২টি শিল্পকলা একাডেমি আধুনিকায়নসহ পর্যায়ক্রমে সকল উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ৪৯৩টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে কালচারাল কমপ্লেক্স স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে দেশে শিশু-কিশোর-যুবসহ মানুষের মেধা বিকাশের অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে। উপজেলা পর্যায়ে নির্মিতব্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৪০০ আসনের মিলনায়তনসহ মাল্টিপারপাস হল থাকবে যেখানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আয়োজন করা যাবে।

‘বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়ে চলছে, একইভাবে আমাদের সংস্কৃতিও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।