শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কারিগরি কমিটির মতামত

করোনা শনাক্তের হার গত দুই সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমলেও মৃত্যুর হার এখনো উদ্বেগের। বিশেষজ্ঞরা সার্বিকভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা নিম্নমুখী হচ্ছে জানিয়ে বলছেন, এতে সুযোগ নেই আত্মতুষ্টির। অন্যদিকে, আগামী দুই সপ্তাহ এই নিম্নমুখী প্রবণতা ধরে রাখতে পারলে বেঁধে দেওয়া সময়ের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে বলে মনে করছে কোভিড-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

একদিকে কোভিড হাসপাতালগুলোতে যেমন রোগী ভর্তি হচ্ছে ঠিক তেমনি ছাড়পত্র পেয়ে বাড়িও ফিরছেন অনেকে। এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, টানা প্রায় দুই সপ্তাহ পর শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) করোনা শনাক্তের সংখ্যা নামে ১০ হাজারের নিচে। অন্যদিকে, শনাক্তের হার গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক তিন সাত শতাংশ হলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ২৩ শতাংশের নিচে।

বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, মোটমুটি রিপ্লেসমেন্টটা এ সময়ের মধ্যেই হতে পারে। আমরা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি দেখলাম। মৃত্যুর সংখ্যাটা স্থির রয়ে গেল। তবে পুরোপুরি রিপ্লেসমেন্ট হলে অর্থাৎ পুরোপুরি ওমিক্রন হয়ে উঠলে মৃত্যুর সংখ্যাটা নিম্নমুখী হবে বলে আশা করা যায়।

করোনা সংক্রমণ ও শনাক্তের হার কিছুটা কমে আসাকে ইতিবাচক বললেও বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিসংখ্যানগত উন্নতিতে সুযোগ নেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার। বরং সংক্রমণের এই নিম্নমুখী প্রবণতা ধরে রাখাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তারা।

কোভিড-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, নিম্নমুখী ধারাটা যদি আগামী ২ সপ্তাহ ধরে রাখতে পারি, অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারির পর হয়তো আমরা অনেক কিছু খুলে দিতে পারব। এমনকি হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া সম্ভব হবে।

শুধু স্কুল কলেজই নয়, সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সংক্রমণ কমিয়ে রাখতে পারলে অন্যান্য বিধিনিষেধও শিথিল করা সম্ভব বলে মনে করে কোভিডসংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি।

গত ২১ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণ রোধে দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের জরুরি নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। তবে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটি আরও কিছুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে পরামর্শ দিয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এরপর গত বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানো হয় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উন্মুক্ত স্থানে ও ভবন অভ্যন্তরে সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ১০০’র বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না। এসব ক্ষেত্রে যারা যোগদান করবেন তারা অবশ্যই কোভিড টিকা সনদ/২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে। এ ছাড়া সব স্কুল, কলেজ এবং সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকবে।

Scroll to Top