মহামারি করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ মোকাবিলায় সরকার আবারও বিধিনিষেধ আরোপের দিকে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে এ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হতে পারে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় পরে বাড়তে পারে।
আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ ইস্যুতে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রমুখ।
বৈঠকে আলোচনা হয়েছে গণপরিবহনে চলাচল, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করার বিষয়ে। এছাড়া রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া শপিংমল, মার্কেটসহ দোকানপাটে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনকে কঠোর থাকতে বলার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনার টিকার সনদ ছাড়া রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ নিয়ম চালু হবে। এই নিয়ম ভাঙলে রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হবে। এছাড়া মাস্ক না পরলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু থাকবে। তবে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার কার্যক্রম আরও জোরদার করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা বেড়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর হার যদিও এখনো কম আছে। সংক্রমণের হার বেড়ে গেলে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার রয়েছে। আমরা এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে আবারও সেই লকডাউনের কথা চলে আসবে। তাহলে সবকিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু এটা আমরা চাই না। তাই এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, পোর্টে স্ক্যানিংয়ের সংখ্যা বাড়ানো হবে। কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে আরও বেশি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশি প্রহরায় কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা রাখা, যাতে কোয়ারেন্টাইন থেকে মানুষ বের হয়ে না যেতে পারে। মানে ঢিলেঢালা কোয়ারেন্টাইন আমরা চাচ্ছি না।
এদিকে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮১ জনে। বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, এসময়ে নতুন করে আরও ৬৭৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে করে দেশে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৪০ জনে।