টিকার আওতায় আসছে ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে টিকার আওতায় আনার জন্য বয়সসীমা ১৮ বছর পর্যন্ত কমানো হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেককে টিকার আওতায় আনতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গাইডলাইন অনুসরণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। পিরোজপুর-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সংসদ নেতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে নভেল করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে। ১৮ বছরের ওপরের সব বাংলাদেশী নাগরিককে করোনার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া সুবর্ণ কার্ডের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নপূর্বক টিকা দেয়া হবে। সারা দেশের শ্রমিকদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেয়া হবে টিকা।

তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৭১৫ জনকে প্রথম ডোজ ও ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজসহ মোট ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬১ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। টিকা সংগ্রহের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকারের গৃহীত এসব কার্যক্রমের ফলে ১২ সেপ্টেম্বর ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় ক্রয় চুক্তি এবং উপহার হিসেবে মোট ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮০ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা সংগ্রহ ও বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে এক কোটি ডোজ স্পুতনিক-৫ টিকা কেনার চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া কোভ্যাক্সের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ সিনোফার্ম ও সাড়ে সাত কোটি ডোজ সিনোভ্যাক টিকা কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশের ৬৭৩টি টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকা দেয়ার কেন্দ্র ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। এরই মধ্যে জনবলকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা দেয়া সম্ভব হবে।

সবার সহযোগিতায় চলমান এ বৈশ্বিক মহামারীকে সফলভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে—এমন আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এজন্য টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সবাইকে নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

উল্লেখ্য, সরকার এ পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসের আটটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, রাশিয়ার তৈরি স্পুতনিক-৫, চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকার বিবিআইবিপি-সিওরভি, চীনের সিনোভ্যাকের টিকা করোনাভ্যাক, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি করা কোমির্নাটি, মডার্নার স্পাইকভ্যাক্স, জনসন অ্যান্ড জনসনের জ্যানসেন কভিড-১৯ টিকা এবং চীনের ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজি অব দ্য চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্স (আইএমবি ক্যাম্পস) উদ্ভাবিত নতুন একটি টিকা, যা এখনো পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্যায়ে রয়েছে।

Scroll to Top