বাংলা একাডেমিতে স্থাপিত ভাষা আন্দোলনের ভাস্কর্যে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে বলে ‘মোদের গর্ব’ ভাস্কর্যটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে আগামী জুন মাসের মধ্যে নতুন আরেকটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে বলে বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ভাস্কর্যটিতে ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি। এটি একটি দুর্বল শিল্পকর্ম বলে বিখ্যাত ভাস্কররা দাবি করে আসছিলেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভাস্কর্যটি ভেঙে নতুন আরেকটি ভাস্কর্য স্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, এজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশের বিখ্যাত ভাস্কর, স্থাপত্য শিল্পীদের মতামতের আলোকে নতুন ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। আগামী জুন মাসের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ করা হবে।
মহাপরিচালক বলেন, প্রতি বছর বইমেলার আগে ভাস্কর্যটি একবার ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হওয়ায় বর্তমানে পরিচর্যা করা হচ্ছে না। এটি কোনো ভাস্কর্যের মধ্যেই পড়ে না। মৃণাল হক যেভাবে আমাদের সংস্কৃতি বিকৃতি করে রাজধানীতে বিভিন্ন ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন, এটিও তেমন একটি ভাস্কর্য।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, ভাস্কর্যটি তৈরি করতে ১৩ লাখ টাকা খরচ হয়। স্পন্সর হিসেবে গ্রামীণফোনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। বাকি টাকা বাংলা একাডেমির নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হয়। ২০০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এটির উদ্বোধন করেন।
ভাস্কর্য নির্মাণকারীদের সহকর্মী শিল্পী হোসেন মো. ফারুক জানান, ভাস্কর্যটি স্থাপনের জন্য বাংলা একাডেমির কাছে পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন মফিদুল। একাডেমি প্রস্তাব পাস করলে মফিদুল হক ওকিল পালকে দিয়ে তিন-চার ইঞ্চির ম্যুরালগুলো তৈরি করেন। ম্যুরালে সোনালি রঙ করা হলে বাংলা একাডেমি তা বাতিল করলে গোপাল নামে একজনকে দিয়ে কাজ করান মফিদুল। পরে মফিদুল ও ওকিল পালের মধ্যে কাজের মজুরি নিয়ে মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে ওকিল পালই ম্যুরাল নির্মাণের কাজ করেন।
তিনি জানান, ভাস্কর্যটির টেরাকোটায় একটি লাশের চিত্রে ভুল রয়েছে। লাশটির ডান কাঁধে বাম হাত এবং বাম কাঁধে ডান হাত রাখা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, ২০ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি