বাংলাদেশ স্বাধীনের সাত বছর পর জন্ম নিয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন এক নারী। তালিকাভুক্ত ওই নারীর বাড়ি উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নে।
ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল পিরোজপুরের নেছারাবাদে। ওই উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবা আবুল কালাম আজাদের পরিবর্তে তালিকায় গেজেটভুক্ত করা হয়েছে তার মেয়ে সালমা বেগমকে।
জানা গেছে, গত ১৯৯৬ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ মারা যান। তার মৃত্যুর পর সরকারি বিধি অনুযায়ী ভাতাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তার (আবুল কালাম আজাদ) স্ত্রী হাওয়া বেগম। তিনি (হাওয়া বেগম) গত ২০১৪ সালে মারা যাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ভাতা বন্টনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্মানী তোলার জন্য অন্য তিন ভাই-বোন মিলে বড় বোন সালমা বেগমকে নমিনি করেন। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ সংশোধিত তালিকা চলতি বছরে প্রকাশিত হয়। আর ওই গেজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার নামের পরিবর্তে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সালমা বেগম।
জানা গেছে, নতুন গেজেটে দেশের এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে। আর সে তালিকায় নেছারাবাদের (স্বরূপকাঠী) ৩৭৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। ওই তালিকায় ১১১০ ক্রমিক নম্বরে গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সালমা বেগমের নাম রয়েছে। সালমা বেগমের বেসামরিক গেজেট ১৯৪৮ নম্বর। আর লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ০৬০৫০৭০০১৬।
এ বিষয় জানতে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হওয়া সালমা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের প্রায় সাত বছর পর ১৯৭৮ সালে আমার জন্ম হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ সংশোধিত গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার নাম রয়েছে। তাতে যে গেজেট নম্বর ও মুক্তিবার্তা নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে তা আমার মরহুম বাবার। গেজেট প্রকাশের আগে উপজেলা সমাজসেবা অফিস আমার কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়েছিলো। তারাই বলতে পারবে কিভাবে আমার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এলো।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস বলেন, একজন অফিস সহকারী দিয়ে কাজ চলছে। তাই হয়তো কোনো ত্রুটির কারণে নামটি তালিকায় এসেছে। এটা সংশোধনের সুযোগ থাকলে তা সংশোধন করা হবে।
নেছারাবাদ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ শেখ একজন সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন। তিনি প্রায় ২৪ বছর আগে মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার ভাতা তুলতেন তার স্ত্রী। তিনিও কয়েক বছর আগে মারা যান। তখন পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাতাভোগী হিসেবে তার বড় মেয়ে ভাতা নিচ্ছিলেন। সেই ভাতাভোগীর নাম কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এলো তা আমার বোধগম্য নয়। গেজেট সংশোধিত না হলে বিষয়টিতে সমস্যা দেখা দেবে।