জাতীয় সংসদে ১৩, ৯৮৭ কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

বিরোধীদলীয় আইন প্রণেতাদের সমালোচনা আর দীর্ঘ আলোচনার পর চলমান বাজেট অধিবেশেনে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বর্ধিত ব্যয় মেটাতে জাতীয় সংসদে সোমবার (০৭ জুন) ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার সম্পূরক বাজেট পাস হয়।

এর আগে ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় বাজেটের পাশাপাশি সম্পূরক বাজেটও সংসদে উপস্থাপন করেন ওইদিন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। সম্পূরক বিল পাস হওয়ার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৪ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মূলতবি করেন।

২০২০-২১ অর্থবছরে ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সম্পূরক বাজেটে ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে এবং ৪৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যয় ৪২ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কমেছে।

ফলে, এ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর জন্য বাজেটের মোট বরাদ্দ ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায়।

বাজেট নিয়ে সাধারণ আলোচনার পর অর্থমন্ত্রী সোমবার (০৭ জুন) সংসদে সম্পূরক বাজেট পেশ করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান ১৯টি দাবির আওতায় বাজেটের পরিমাণ বাড়াতে বলেছিল।

১১ জন সদস্য সংসদ ১৯০টি ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের দুটি ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।

আরো পড়ুন: বাজেট শুল্ক আরোপের প্রস্তাবনার পরই দাম বাড়ল ক্যাপসিকামের

এ ছাঁটাইয়ের প্রস্তাবগুলো জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, রওশন আরা মান্নান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, বিএনপির হারুনুর রশিদ, রুমিন ফারহানা, মো. মোশারফ হোসেন, গণফোরামে এমপি মুকাব্বির খান ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু উত্থাপন করেন।

তবে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ সর্বনিম্ন ১ দশমিক ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পেয়েছে ৪৮২ কোটি টাকা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১০ কোটি টাকা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৭৯ কোটি টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২০৫ কোটি টাকা, পরিকল্পনা বিভাগ ২৪২ কোটি টাকা, আইএমইডি ৬ কোটি টাকা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ১৪২ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১০০৫ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ২৮৫০ কোটি টাকা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৪৮৯ কোটি টাকা, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩৮৪ কোটি টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয় ৫৬৫ কোটি টাকা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ১৯০৫ কোটি টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৩৩২ কোটি টাকা, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১০৩৯ কোটি টাকা, পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৬৭৬ কোটি এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ৬৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।

এ সময়, অর্থপাচার ও স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির এমপিরা।

সংসদে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিচালনাগত স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে একবছরের মধ্যে নতুন আইন করা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক জানান, ব্যবস্থাপনা ভালো ছিল বলেই করোনায় মৃত্যুর হার এখনও কম। জাতীয় সংসদে চলমান বাজেট অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

Scroll to Top