কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ৩৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আলোচিত সাবেক হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ গ্রেফতার হওয়া নেতাদের কমিটিতে রাখা হয়নি।
আজ সোমবার (৭ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর খিলগাঁও জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল মাদরাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এ কমিটি ঘোষণা করেন নতুন মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে স্থান পাননি বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, জুনায়েদ আল-হাবিব, মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ গ্রেফতারকৃত নেতারা।
তিনি বলেন, আমাদের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও প্রধান উপদেষ্টা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী দু’জনই অসুস্থ। সেজন্য তারা আসতে পারেননি। তারা সালাম জানিয়েছেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য বলে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে প্রত্যেক জেলা কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিবেচিত হবেন। জেলা কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারিকে অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হতে হবে।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে হাটহাজারী মাদরাসার তৎকালীন মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফি ইমান আকিদা রক্ষার উদ্দেশে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর পর নেতৃত্ব আসে তার হাতে গড়া খলিফাদের ওপর। গত ২৫ এপ্রিল ২০২১ দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আমির জুনায়েদ বাবুনগরী সিনিয়র নেতাদের পরামর্শক্রমে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে একই সঙ্গে আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রধান উপদেষ্টা, জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির, আল্লামা নুরুল ইসলামকে মহাসচিব, আল্লামা সালাহ উদ্দিন ও অধ্যক্ষ মিজান চৌধুরীকে সদস্য করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। তখন সিদ্ধান্ত হয়, ওই আহ্বায়ক কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবে।
নুরুল ইসলাম বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার ৭ জুন হেফাজতের ইসলামের ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলো।
নতুন কমিটিতে যারা আছেন-
আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, আব্দুল হক মোমেনশাহী, সালাহউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা মুহিবুল্লাহ গাছবাড়ী সিলেট, মাওলানা ইয়াহহিয়া হাটহাজারী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ফরিদাবাদ, মাওলানা তাজুল ইসলাম, মুফতি জসিম উদ্দিন, মহাসচিব হাফেজ নুরুল ইসলাম জিহাদী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা আব্দুল আউয়াল নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা লোকমান হাকিম চট্টগ্রাম, মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোর ও মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী।
সহকারী মহাসচিব মাওলানা জহুরুল ইসলাম মাখজান, মাওলানা ইউসুফ মাদানী সাহেবজাদা আল্লাহ শাহ আহমদ শফি। সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস চট্টগ্রাম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, সহ-অর্থসম্পাদক মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী নাজিরহাট, প্রচার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী সাভার ও সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা জামাল উদ্দিন কুড়িগ্রাম।
দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী ও সহকারী দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক নোয়াখালী।
সদস্য মাওলানা মোবারক উল্লাহ বিবাড়ীয়া, মাওলানা ফয়জুল্লাহ পীর মাদানীনগর, মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল চট্টগ্রাম, মাওলানা মোস্তাক আহমদ খুলনা, মাওলানা রশিদ আহমদ কিশোরগঞ্জ, মাওলানা আনাস ভোলা, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী ও মাওলানা মাহমুদ আলম পঞ্চগড়।
১৬ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি:
প্রধান উপদেষ্টা, আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী, আল্লামা সুলতান যওক নদভী, আল্লামা আব্দুল হালীম বোখারী পটিয়া, আল্লামা নুরুল ইসলাম আদীব ফেনী, আল্লামা আব্দুল মালেক হালীম, আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী মোমেনশাহী, আল্লামা রশিদুর রহমান ফারুক বর্ণভী, আল্লামা নূরুল হক বটগ্রাম কুমিল্লা, আল্লামা আবুল কালাম মুহাম্মদপুর, আল্লামা শিব্বির আহমাদ নোয়াখালী, আল্লামা জালাল আহমাদ ভূজপুর, আল্লামা আশেক এলাহী উজানী, আল্লামা হা. হাবিবুল্লাহ. বাবুনগরী, আল্লামা আব্দুর বাছীর সুনামগঞ্জ, আল্লামা আফজালুর রহমান ফেনী।
নয় সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় খাস কমিটি:
আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী আল্লামা হাফেজ নূরুল ইসলাম ঢাকা, অধ্যক্ষ মিযানুর রহমান চৌধুরী, পীর সাহেব দেওনা, আল্লামা সাজেদুর রহমান, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, আল্লামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী সিলেট, আল্লামা আব্দুল আউয়াল, নারায়ণগঞ্জ ও আল্লামা মুহিউদ্দীন রব্বানী সাভার ঢাকা।
খাস কমিটি “মজলিসে শুরা” হিসেবে বিবেচিত হবে। হেফাজতের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। এ কমিটি তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে লিখিত বক্তব্যে জানান নুরুল ইসলাম জিহাদী।