কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ৩১৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে মামুনুলের ব্যাংক একাউন্টে ৬ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
আজ মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ডিএমপির হেডকোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বিয়েতে মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবিবসহ কয়েক নেতার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আল্লামা শফিকে সরিয়ে দিয়ে বাবুনগরীকে আমির করার পরিকল্পনা হয়।
এর আগে শনিবার (২৪ এপ্রিল) গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান সারা দেশে কোন মাহফিলে কে ওয়াজ করবেন, সেটাও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন নামের এই সংগঠনটি বেশ তৎপর। হেফাজতের উগ্রপন্থী নেতারা এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। কোথাও কোনো ওয়াজ মাহফিল করতে হলে তাদের মাধ্যমে আসতে আয়োজকদের বাধ্য করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার জানায়, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন’র নেতৃত্বে ছিলেন। আগে রফিকুল ইসলাম মাদানী এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, সম্প্রতি তাকে যুক্ত করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তাণ্ডবের ঘটনায় সম্প্রতি মামুনুল হকসহ হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মাহবুব আলম বলেন, সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানের ‘তেহেরিক-ই-লাব্বায়িক’ নামের সংগঠনের আদলে তারা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে গঠন করে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো এ দেশকে গড়ে তুলতে চায়। যার পেছনে জামায়াত-শিবির রয়েছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) গ্রেফতার হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সাবেক সভাপতি। হেফাজতে ইসলামের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান পুলিশের যুগ্ম কমিশনার।
হেফাজতে ইসলাম মাদ্রাসার শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও উল্লেখ করেন মাহবুব। তিনি বলেন, সংগঠনটির নেতারা নিরীহ শিশু ছাত্রদের বড় পুঁজি বলে মনে করে। এই ছাত্রদের সহজেই রাস্তায় বের করে আনা যায় এবং কাজেও লাগানো যায়।