রাজশাহীতে হিউম্যান হলারের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে আগুন, নিহত ১৭

বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী রাজশাহীতে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অগ্নিকাণ্ডে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। মাইক্রোবাসে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এই অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার কাজে যুক্ত হওয়া রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা।

আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে মহানগরীর কাটাখালির কাপাশিয়া এলাকায় কাটাখালি থানার সামনেই এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে রাজশাহী মহানগরীর থানা পুলিশ সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান বর্তমানে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

\"death

এরই মধ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে সেখানে মহানগর পুলিশ ও সদর ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।

অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের শরীর পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত নিহতদের কারোরই নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে হলে মরদেহগুলো থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে হবে বলেও প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
\"Road

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী থেকে যাত্রীবাহী হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে, রংপুর সদরের মজিদপুর এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস রাজশাহীতে আসছিল। মাইক্রোবাসে মোট ১৭ জন যাত্রী ছিলেন। কাপাসিয়া এলাকায় কাটাখালি থানার সামনে বাস ও মাইক্রোবাসটি রাজশাহীর পৌঁছামাত্র মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে ছয়জনকে উদ্ধার করলেও বাকি ১১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মাইক্রোবাসের ভেতরেই দগ্ধ হয়ে মারা যান।

আরএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মাইক্রোবাসে যাত্রীদের মধ্যে ১৩ জন একই পরিবারের সদস্য। সংঘর্ষের পরপরই মাইক্রোবাসের একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ঘটনার পর স্থানীয়রা ছয়জনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। বাকিরা মাইক্রোবাস থেকে বের হতে পারেননি। আগুনের তীব্রতার কারণে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফলে মাইক্রোবাসের ভেতরেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১১ জন মারা যান। আর যাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো তারাও মারা গেছেন। দুর্ঘটনার পর রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসলে বাকি মরদেহগুলো উদ্ধারে তৎপরতা শুরু হয়। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে বলেও জানান এই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ঘটনাস্থলে আছেন। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মাইক্রোবাস থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, সংঘর্ষের ফলে মাইক্রোবাসের দুইটি সিলিন্ডার এর মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়। এর ভেতর থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন ধরে যায়। আগুন নেভানো হয়েছে। যাত্রীদের শরীর পুরোপুরি পুড়ে গেছে।

Scroll to Top