নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী মন্তব্য করে বলেছেন যে, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু এদেশে মানুষের কাছে নয় এ অঞ্চলের মানুষের কাছেও পূজনীয় নেতা।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (২২ মার্চ) ঢাকার প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী বলেন, অনলবর্ষী বক্তা, সংগঠক ও যোদ্ধা হিসাবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন এবং অর্জন করেছিলেন নতুন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য। এ অঞ্চলের মানুষের কাছেও তিনি পূজনীয় নেতা।
নেপালের রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুণ বয়স থেকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনন্য সাধারণ নেতা, চমৎকার সংগঠক, ব্যক্তিত্বে দৃঢ় সংকল্প এবং লড়াকু যোদ্ধা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিরাম সংগ্রাম বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। যার জন্য অবিচল নেতৃত্ব ও নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা ছিল তার।
বঙ্গবন্ধু বিষয়ে বিদ্যা দেবী আরও বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশের ক্রমাগত অগ্রগতিই জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন।
নেপালের রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদাতা দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ছিল ষষ্ঠ। স্বাধীনতার পর খুব অল্প সময়ের শাসনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক নৈকট্যের কথা তুলে ধরেন বিদ্যা দেবী ভান্ডারী।
উন্নয়নের মাধ্যমে নেপাল ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আকাশ, স্থল ও রেলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন বিদ্যা দেবী।
দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নেপালের রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতি বিরাজমান। বাণিজ্যকে দুই দেশের জন্যই লাভজনক করতে ঘাটতি কমিয়ে আনা দরকার।
জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে নেপাল-বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্যের দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা’র ৬ষ্ঠ দিনের (সোমবার) অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, নেপালের রাষ্ট্রপতির কন্যা উষা কিরণ ভান্ডারী।
আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। আলোচনা পর্বের পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।