ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুলের হকের উপস্থিতিতে দুই মেয়রপ্রার্থীর সংঘর্ষের ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার (৬ মার্চ) রাতে কসবা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে রোববার (৭ মার্চ) ভোররাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- হৃদয় খান (২২), মো. কাইয়ূম (২২), মো. রাসেল (৩০), মো. রবিন (২৫), সালাউদ্দিন (২৭) ও রবিউল্লাহ (৩২)। এদের মধ্যে রবিউল্লাহর বাড়ি কসবা উপজেলার নোয়াপাড়া ও বাকিদের বাড়ি তেতৈয়া গ্রামে।
কসবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর ভূঁইয়া জানান, শনিবার রাত ১২টার পর মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে নথিভুক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত ৫ মার্চ বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কসবা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে দুই মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এদিন স্মার্ট কার্ড বিতরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিজ নির্বাচনী এলাকা কসবায় আসেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তাকে স্বাগত জানাতে কর্মী-সমর্থকদের মিছিল নিয়ে কসবা উপজেলা পরিষদে যান কসবা পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম এ আজিজ। তারা দুজনই আসন্ন কসবা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
বেলা ১১টায় দুই মেয়রপ্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেওয়ার সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরে সংঘর্ষ থেমে গেলে বেলা সাড়ে ১১টায় আইনমন্ত্রী কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর বক্তব্য দেওয়ার সময় ওই দুই মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকরা পাশের প্রধান সড়কে তুমুল সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কসবা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়ক। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি দোকান। পরবর্তীতে মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান শেষ না করেই পুলিশি পাহারায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, করোনা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক দীর্ঘ এক বছর পর তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করেন।