দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত শহর, মৎস্য বন্দর এবং পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন শিবির থেকে পঞ্চম দফায় আরও প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ২১টি বাস উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে এসব বাস ছেড়ে যায়।
বিষয়টি বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী এ রকম প্রায় তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পঞ্চম দফায় ভাসানচর যাচ্ছেন। তাদের একটি বড় অংশকে আজ উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এ সংখ্যা কম-বেশি হতে পারে। ’
তিনি জানান, বুধবার (৩ মার্চ) চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের ট্রলারে করে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে চতুর্থ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে ৯ হাজার ৭০৩ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।
ইতোমধ্যে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন এবং চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফার ৩ হাজার ২৪২ জন ও চতুর্থ দফায় ৩ হাজার ১৫ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পর থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
এছাড়া নতুন-পুরনো মিলে বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।