সকল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম স্থগিত করেছে দেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আগামী মার্চ পর্যন্ত এই কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই দলের জেনা-উপজেলাসহ তৃণমুল পর্যায়ে দলীয় সভাপতি নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সম্মেলন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। আপাতত আগামী মার্চ পর্যন্ত জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল সম্মেলন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা যারা তৃণমূলের সম্মেলনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখা-শোনার দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরকে এই নির্দেশ দিয়েছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দলের ৭৮টি সংগঠনিক জেলার নেতাদেরকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। দলের সভাপতির নির্দেশ অনুযায়ী তারা তৃণমূল সম্মেলন আপতত স্থগিত রাখতে বলেছেন। তবে এর মধ্যে মানবিক কার্যক্রম যেমন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, শীতবন্ত্র বিতরণের মতো কার্যক্রম চালানো হবে।
গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, সব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে যে সব জায়গায় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেগুলোর সম্মেলন দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। সে অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষের কর্মসূচি পালনের জন্য মার্চের শুরুতে তৃণমূল সম্মেলন কিছু দিন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বছরব্যাপী মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিক শুরুর পর ওই কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে তৃণমূল সম্মেলনগুলো করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এর পর পরই দেশে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। মার্চের মঝামাঝিতে সকল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যকম স্থগিত হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নীতি পর্যায়ের ওই নেতারা জানান, গত বছর অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় স্বল্প পরিসরে সাংগঠনিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে শুরু করা হয়েছিল। একটি জেলাসহ কয়েকটি উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে।
বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। করোনা এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের গতি-প্রকৃতি কি হয় সেটা নিয়ে উদ্বেগ আছে। ইতোমধ্যে আমেরিকা, ইউরোপের অনেক দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আগের তুলনায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশেও এই পরিস্থিতি কি হয় সেটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলন স্থগিত রাখা হয়েছে।
ওই নেতারা আরও জানান, আশা করা হচ্ছে আগামী এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ কমে আসতে পারে। তখন পুনরায় এই সম্মেলন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হতে পারে। তবে সব কিছুই করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। এ কারণে আপাতত মার্চ পর্যন্ত সম্মেলন স্থগিত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আমরা যারা তৃণমূল সম্মেলনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখার দায়িত্বে আছি, তাদেরকে কয়েক দিন আগে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সম্মেলন স্থগিত রাখার। কারণ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এই পরিস্থিতিতে কি হয় সেটা দেখার বিষয় আছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আপাতত মার্চ পর্যন্ত জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের সম্মেলন স্থগিত থাকবে। আশা করা হচ্ছে এপ্রিলে পরিস্থিতি কমে আসতে পারে, তখন আবার কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে যেসব মানবিক কার্যক্রম রয়েছে দলের পক্ষ থেকে সে কার্যক্রম চালানো হবে। ’