বাংলাদেশের বেসরকারি ও সরকারি গ্রাহকদের কাছে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া আট হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বকেয়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে। তাদের বকেয়া বিলের পরিমাণ তিন হাজার ৭৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিষয়টি পর্যালোচনা করে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের হয়রানি রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়। কমিটি প্রকল্পের অপচয় রোধ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব প্রকল্প সম্পন্ন করার সুপারিশ করে। এছাড়া বিদ্যুতের সরকারি বকেয়া আদায়ের জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র ১৬তম বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার। কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, বেগম নার্গিস রহমান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, সারা দেশে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া বিলের পরিমাণ আট হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি বকেয়া আছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে, তাদের বকেয়া বিলের পরিমাণ তিন হাজার ৭৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সবচেয়ে কম বকেয়া ওজোপাডিকোর, ৪৪৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতে বকেয়া ছয় হাজার ৯৬২ কোটি ৭৪ লাখ। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরের কাছে বকেয়া ৭৪৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আধা সরকারি খাতের কাছে বকেয়া রয়েছে ১৯৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। সরকারি খাতের মধ্যে সবচেয়ে বকেয়ার ৬৯৪ কোটি ৯২ লাখ টাকাই স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিল উল্লেখ করে বলেন, ‘আসলে বিদ্যুৎ বিলের টাকা তারা অন্য উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করে। কিন্তু বকেয়া বিলের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়লে জনগণের উন্নয়নেই যে ব্যবহার হয় এটা বুঝতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবকে আমরা বলেছি, সচিব কমিটির বৈঠকে যেন সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।’
সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের চলমান এবং পাইপ লাইনে থাকা প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।