করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন পর্যন্ত লকডাউনের চিন্তা নেইঃ আনোয়ারুল ইসলাম

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, শীত মৌসুমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন করা হলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সেই চিন্তা সরকার করছে না।

বরং করোনা থেকে সুরক্ষায় মাস্ক ব্যবহারের উপরই জোর দিচ্ছে সরকার, মাস্ক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি কোনো সেবাই দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আর করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২ নভেম্বর) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
ভার্চুয়্যাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যরা সচিবালয় থেকে অংশ নেন।

করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবজনিত বিপর্যয় থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন-অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।

সরকার কি আবারও মুভমেন্টের উপর কোনো রেস্ট্রিকশন (লকডাউন) আনার চিন্তা-ভাবনা করছে- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত না। আমাদের আল্লাহর রহমতে তেমন অবস্থা নেই। আমাদের যে অবস্থা সবাই মাস্ক ব্যবহার করলে আমরা কমফরটেবল জোনে থাকতে পারবো। এটা আজ প্রধানমন্ত্রীও বলছিলেন।

তিনি বলেন, এটা আমরা এনশিওর করে দিচ্ছি। কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠোনে যেন সার্ভিস না পাওয়া যায়। আমরা সব অফিসে সেই নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছি। যেকোনো পাবলিক প্লেসেই মাস্কের বিষয়ে এই কঠোর নির্দেশনা থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজও কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু আমেরিকা ও ইউরোপের অবস্থা খুবই খারাপ। ইউরোপে ম্যাক্সিমাম দেশ লকডাউনে চলে গেছে। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স লকডাউন দিয়ে দিয়েছে। ফ্রান্সে অলরেডি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কেউ অনুমতি ছাড়া বাসা থেকে বের হতে পারবে না। বের হতে হলে আগে পারমিশন নিতে হবে, তাও অনুমতি পাবে এক ঘণ্টার জন্য। এক কিলোমিটার বাইরে কেউ যেতে পারবে না। সব লোক প্যারিস ছেড়ে দিচ্ছে, প্রায় ৭শ কিলোমিটার জ্যাম হয়ে গেছে।

‘সেজন্য এগুলো বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যে আমরা যেভাবে আছি সেটা কমফরটেবল, কিন্তু এতে সন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই। সবাইকে কেয়ারফুল থাকতে হবে। বিশেষ করে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’- এটাকে ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। সামাজিক আন্দোলন, ক্যাম্পেইন বা লিগ্যাল যেভাবেই হোক এটাকে এনশিওর করতে হবে। কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া যাতে কেউ কোথাও না আসে। এটা অলরেডি সব জায়গায় বলে দিয়েছি। এরমধ্যে সব সচিব, ডিপার্টমেন্ট, নন-গভর্নমেন্ট সবাইকে ম্যাসিভলি বলে দিয়েছি। সেজন্য আপনাদের (গণমাধ্যম) সবচেয়ে বেশি উদ্যোগ নিতে হবে। ’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গতকাল মসজিদে বলে দিয়েছি, মাস্ক ছাড়া মসজিদে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, বায়তুল মোকাররমের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আমি সারপ্রাইজড হয়েছি, কেউ তিন ফুটের গ্যাপ ছাড়া দাঁড়াচ্ছে না এবং নিয়ম মেনে চলছেন না। আর মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ যদি মাস্ক ছাড়া মসজিদে যায় তাহলে তাকে সেজন্য ‘পে’ করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, টায়ার্ড হওয়ার উপায় নেই।

গণপরিবহনে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা নিয়ে তিনি বলেন, পাবলিক পরিবহনে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে আমি অলরেডি বলে দিয়েছি। তারা মিটিং করে ফেলেছে।

Scroll to Top