শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, করোনার কারণে চাকরি হারানো বা আয়-রোজগার কমে যাওয়া অভিভাবকদের সন্তানদের টিউশন ফির বিষয়ে মানবিক হতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
যারা চাকরি হারিয়েছেন বা আয়-রোজগার হারিয়েছেন, তাদের যতটা সম্ভব ছাড় দেওয়া বা কিস্তিতে পরিশোধ করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল নিয়ে বুধবার (২১ অক্টোবর) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিউশন ফি শিক্ষার্থীদের দেওয়ার কথা। কিন্তু স্কুল তো চলতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলেছি, অভিভাবকদেরও বলেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, তার মানে এই নয় যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খরচ বন্ধ আছে। কারণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি দিতে হচ্ছে। বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু হয়তো প্রতিদিনকার বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল লাগছে না। কিন্তু আরও বহু খরচ তাদের লাগছে। সবাই যেহেতু অনলাইনে ক্লাস করাচ্ছে সেক্ষেত্রেও তাদের অতিরিক্ত কিছু খরচ হচ্ছে।
‘তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও চলতে হবে। কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থীর জন্য কিন্তু একটা বিরাট সমস্যা তৈরি হবে। এরকম বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সমস্যা হবে। কাজেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চালু রাখতে হবে, শিক্ষকদেরও জীবন-জীবিকা চালিয়ে নিতে হবে। তাদেরও তো পরিবার রয়েছে, তাদেরও তো আয়-রোজগারের বিষয়টি রয়েছে। ’
দীপু মনি বলেন, যারা সরকারি চাকরিজীবী অভিভাবক তাদের তো আয়-রোজগারের কোনো সমস্যা হয়নি। যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এবং বেতন পাচ্ছেন তাদেরও সমস্যা নেই। সমস্যা যারা চাকরি হারিয়েছেন বা ব্যবসা করতেন, এই সময়টায় একেবারেই বন্ধ ছিল তাদের সমস্যা এবং যারা স্থানান্তরিত হচ্ছেন তাদের সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাক্সেস করার সমস্যা। স্থানান্তরিতদের ব্যাপারে বলে দিয়েছি যে, তারা অনলাইনে করতে পারবেন। অনলাইনে অ্যাক্সেস না থাকলে নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আপাতত যুক্ত থাকবেন।
‘যারা চাকরি হারিয়েছেন বা আয়-রোজগার হারিয়েছেন তাদের বলবো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মানবিক আচরণ করবেন। তাদের যতটা সম্ভব ছাড় দেওয়া না হলে কিস্তিতে পরিশোধ করাসহ নানান ধরনের ব্যবস্থা হতে পারে। ’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উভয়পক্ষকে আন্তরিকতার সঙ্গে সন্তানদের শিক্ষা চালিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেদের সামর্থ্যমতো যা কিছু করার সম্ভব তা করতে আহ্বান জানাচ্ছি, আমি আবারও জানাবো। আমাদের সন্তানদের যেমন শিক্ষা চালিয়ে নিতে হবে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও চালু রাখতে হবে, আমাদের শিক্ষকদেরও জীবন-জীবিকার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
‘কাজেই ঢালাওভাবে বেতন বাদ দিয়ে দেওয়া বা এখন বেতন দেওয়া হবে না, এ জাতীয় কোনো সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। ’