শুরু হয়েছে ৫ম জাতীয় যুব পরিবার পরিকল্পনা সম্মেলন

শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে বাংলাদেশ ৫ম জাতীয় যুব পরিবার পরিকল্পনা সম্মেলন শুরু হয়েছে। আয়োজক সংস্থা সিরাক-বাংলাদেশের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনটিতে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করছেন সারাদেশ থেকে প্রায় ৫০০ কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী। এতে তারা আটটি প্ল্যানারি সেশন, চারটি প্যারালাল সেশন, নেটওয়ার্কিং ও দক্ষতা উন্নয়ন ট্রেনিং সেশনসহ বিভিন্ন আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন।

সম্মেলনটি ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয়ে এ বছর ৫ম বারের মতো কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, অধিকার এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রেখে চলেছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আয়োজকরা।

এ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইয়ুথ হেলথ একশন নেটওয়ার্ক (বিহান), ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ, রাইট হেয়ার রাইট নাও বাংলাদেশ, মেরী স্টোপস বাংলাদেশ, কোয়ালিশন অব ইয়ুথ অর্গানাইজেশনস ইন বাংলাদেশ (সিঅয়াইওবি), পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল, অপশন্স কনসালটেন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড, ইউকেএইড, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার এবং ইউবিআর এলাইয়েন্স সহযোগী সংস্থা হিসেবে অংশগ্রহণ করছে।

কোভিড১৯ পরিস্থিতিতে সতর্কতার কারণে সম্মেলনটিতে কেবলমাত্র বক্তারা অনুষ্ঠানস্থালে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বশরীরে ছিলেন এবং অংশগ্রহণকারীরা সম্মেলনের ওয়েবসাইটে বিশেষভাবে নিবন্ধন করে অনলাইন প্ল্যাটফমের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন।

উদ্বোধনী সেশনে সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সিরাক-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকতের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. অসা টোরকেলসন, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মারভিন ক্রিস্টিয়ান এবং যুব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ফাহমিদা হক রিমতি।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেন, আমাদের প্রায় ১০ বছর আগে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তাই এখন শিক্ষানীতিকে সংশোধন, পরিমার্জন, সংযোজন ও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দেশের বিপুল জনসংখ্যাকে শিক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। এখন প্রয়োজন শিক্ষার গুণগত মান অর্জন।

জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মারভিন ক্রিস্টিয়ান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আজকের তরুনরা দায়িত্ব গ্রহন ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এর অন্যতম উদাহরণ হলো গত পাঁচ বছর ধরে এই সম্মেলনের আয়োজন। প্রজনন স্বাস্থ্য তথ্য এবং সেবা পাওয়া সব তরুণ তরুণীর অধিকার। আমরা কিশোর-কিশোরী ও তরুণ তরুণীদের সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং নিজের শরীর সম্পর্কে জানা।

ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. অসা টোরকেলসন বলেন, বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের প্রজনন স্বাস্থ্য এবং সঠিক তথ্য এবং সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো সুস্বাস্থ্যময় জাতি গঠন। কারণ মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুরহার শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে এবং সেই সাথে জাতিকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।

যুব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ফাহমিদা হক রিমতি বলেন, আমাদের সমাজে আমরা সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে আমরা ভুল পথে পা বাড়াই। ইউনিসেফের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশে বিশাল সংখ্যক মেয়ের এই কোভিড-১৯ এর সময়ে বিয়ে হয়ে গেছে। অল্প বয়সেই মেয়েদের প্রতি নির্যাতন, ধর্ষণ এবং বিচার না পাওয়া এবং অল্প বয়সে গর্ভবতী হয়ে যাওয়া তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সঠিক শিক্ষার অভাবে হাজার হাজার মেয়ে তাদের বয়ঃসন্ধিকালে সঠিক জ্ঞানের অভাবে নানা মানসিক সমস্যায় ভোগে।

 

Scroll to Top